যে সড়ক বর্ষায় তলিয়ে থাকে চার মাস
মঙ্গলকাটা মূল সড়ক থেকে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত নির্মিত মাটির বাইপাস সড়ক
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের মঙ্গলকাটা বাজারের পাশের মূল সড়ক থেকে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত ফসলের মাঠের ওপর দিয়ে নির্মিত মাটির বাইপাস সড়ক। কিন্তু সড়কটি অতি নিচু থাকায় বর্ষায় মানুষের চলাচল করা সম্ভব হয় না। এ কারণে সড়ক উঁচুকরণ ও প্রশস্ততা বৃদ্ধিকরণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল মোতালিবকে ১ হাজার ১০০ ফুট মাটির এই বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। বরাদ্দের টাকায় মঙ্গলকাটা বাজারের মূল সড়ক থেকে শুরু হওয়া সড়কের কাজ মাঝপথে থেমে যায়। পরে নিজের উদ্যোগে ২ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করে দেন তিনি। সড়কের মেঝেতে পানি চলাচলের সুবিধার্থে দুই স্থানে দেওয়া হয়েছে দুটি কার্লভাট।
বিজ্ঞাপন
বাইপাস সড়ক নির্মাণে মঙ্গলকাটা বাজার এলাকা যানজট মুক্তসহ মঙ্গলকাটা, মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া, দুর্লভপুর, দলাইপাড় ও বালুচর গ্রামের মানুষ এবং বৃন্দাবননগর, বনগাঁও, নৈগাং প্রভৃতি এলাকার মানুষ ও যানবাহন চলাচলের সহজ যোগাযোগমাধ্যম সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জমির ফসলি কাজে এই বাইপাস সড়ক কৃষকদের অনেক উপকারে আসছে।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কয়েক গ্রামের মানুষ ও যান চলাচলের সহজ যোগাযোগমাধ্যম এই বাইপাস সড়ক। কিন্তু বর্ষায় ডুবে যাওয়ায় সড়ক দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। তাই দ্রুত এই বাইপাস সড়ক উঁচু করে সড়কের প্রশস্ততা বৃদ্ধির দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বিজ্ঞাপন
দুর্লভপুর গ্রামের মঙ্গলকাটা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল মিয়া ও সাফিয়া বেগম বলেন, আমরা দলাইপাড় গ্রাম থেকে অতি সহজে এই বাইপাস সড়ক দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করি। বর্ষায় সড়ক ডুবে গেলে আমরা মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়ি। আমাদের দাবি সড়ক উঁচু করা হোক।
দলাইপাড় গ্রামের শাহজাহান মিয়া বলেন, ফসলি জমির ওপর দিয়ে নির্মিত এই বাইপাস সড়ক বর্ষায় পানিতে ডুবে থাকে অন্তত চার মাস। এই সড়ক দিয়ে একাধিক গ্রামের মানুষ চলাফেরা করে থাকেন। সড়ক উঁচুকরণ হলে সারা বছর বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
মঙ্গলকাটা বাজারে প্রবেশের মূল সড়ক থেকে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত নির্মিত মাটির বাইপাস সড়ক এই অঞ্চলের মানুষের সহজ যোগাযোগমাধ্যম। এই সড়কের উঁচুকরণ ও প্রশস্ততা বাড়লে সারা বছর মানুষ চলাচল করতে পারবে।
আব্দুর রব, উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালিব জানান, মানুষের ভোগান্তি ও বাজারের যানজট কমাতে এই বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, এই বরাদ্দের টাকায় সড়কের নির্মাণকাজ মাঝপথে থেমে যায়। পরে এলাকাবাসীর যোগাযোগ বিবেচনা করে নিজস্ব উদ্যোগে পুরো সড়ক নির্মাণ করে দিই। বর্তমানে সড়কের উঁচুকরণ ও প্রশস্তকরণের জন্য আরও বরাদ্দের প্রয়োজন।
সুনামগঞ্জ উত্তর সুরমা উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রব বলেন, মঙ্গলকাটা বাজারে প্রবেশের মূল সড়ক থেকে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত নির্মিত মাটির বাইপাস সড়ক এই অঞ্চলের মানুষের সহজ যোগাযোগমাধ্যম। এই সড়কের উঁচুকরণ ও প্রশস্ততা বাড়লে সারা বছর মানুষ চলাচল করতে পারবে।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুকশেদ আলী এ ব্যাপারে ঢাকা পোস্টকে বলেন, মঙ্গলকাটা বাজারের পাশের মূল সড়ক থেকে মঙ্গলকাটা পূর্বপাড়া পর্যন্ত মাটির বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক নিচু থাকায় বর্ষায় তলিয়ে যায়। কিন্তু এবার মাটি ভরাটে কর্মসৃজনের বরাদ্দ নেই।
এনএ