আমি একটা ঘর ভিক্ষা চাই
নিজের কুঁড়েঘরের সামনে প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা
মুন্সিঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে মাসের পর মাস ইউপি সদস্যের (মেম্বার) পেছনে ঘুরেও সরকারি ঘর পাননি প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা। এ অবস্থায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শীতের মধ্যে অসহায় জীবনযাপন করছেন তিনি। পাঁচ মাস ধরে মেম্বারের পেছনে ঘুরেও সরকারি ঘর না পেয়ে চরম হতাশায় রয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি কুঁড়েঘরে সিরাজ মোল্লার বসবাস। শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লার এক হাত ছোট। উচ্চতায় সাড়ে ৩ ফুট। কানে কম শোনেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বড় ধরনের কোনো কাজ করতে পারেন না সিরাজ।
বিজ্ঞাপন
খোঁঁজ নিয়ে জানা যায়, পৈতৃক সূত্রে দুই শতক ভিটেবাড়ির মালিক হন সিরাজ মোল্লা। তার কুঁড়েঘর বসবাসের অযোগ্য। টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। শীতের দিনে সারারাত শিশির পড়ে ঘরের ভেতর। কাঁথায় মুখ লুকালেও সকালে সব কুয়াশায় ভিজে যায়। এ অবস্থায় খুব অসহায় জীবনযাপন করছেন সিরাজ ও তার পরিবারের সদস্যরা।
সিরাজ মোল্লার স্ত্রী সামজেলা বেগম বলেন, ঘরের চাল দিয়ে শিশির পড়ায় লেপ ও কাঁথা মুড়ি দিয়ে থাকি। চাল দিয়ে পানি পড়ে সারারাত। আমাদের এলাকার মেম্বারকে মাসের পর মাস বলেছি, একটা সরকারি ঘর দিতে। গুরুত্ব দেয়নি। আসলে আমাদের দেখার কেউ নেই।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বছরের পর বছর কুঁড়েঘরে থাকছি। বৃষ্টির দিনে ঘরে থাকা যায় না। ঘরের চাল ও বেড়ায় অসংখ্য ছিদ্র। কোনোমতে জীবনযাপন করছি আমরা।
সিরাজ মোল্লা বলেন, আমি কামলা দিয়ে যা পাই তা খাই। আমার ঘর করার সামর্থ্য নেই। গরিব মানুষ আমরা। রোদ, বৃষ্টি-ঝড়, শীত আমাদের ওপর দিয়েই যায়। আমি একটা ঘর ভিক্ষা চাই। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই।
আমাদের মেম্বার কালাম পাইকের কাছে গেছি বহুবার। পাঁচ মাস ধরে তার পেছনে ঘুরছি। আমাকে একটা ঘর দেবে বলেছেন।। কিন্তু বলেও দেননি মেম্বার; ঘর দিলেন অন্যদের। আমার কপাল খারাপ।
সিরাজ মোল্লা, প্রতিবন্ধী
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য কালাম পাইক বলেন, সিরাজ মোল্লা অসহায় লোক। তার ঘর নেই। ঘরের জন্য আমি চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছি। এবার ঘরের বরাদ্দ এলে তাকে দেওয়া হবে।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যাদের জমি নাই তাদের জমিসহ ঘর দিচ্ছে সরকার। কিছুদিন পর যাদের জমি আছে ঘর নাই তাদের ঘর বানিয়ে দেওয়া হবে। তখন খোঁজ নিয়ে ওই প্রতিবন্ধীকে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
এএম