টানা ৪৬ দিন বন্ধ থাকার পর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে আগামীকাল সোমবার (০৪ অক্টোবর) পরীক্ষামূলক ফেরি চলাচল শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। এখন শুধু কে-টাইপের ফেরি চলবে। ডাম্ব ও রো রো ফেরি বন্ধই থাকবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শিমুলিয়ার ৩ নম্বর ঘাটের পূর্ব পাশে ফেরি শাহ জালাল, শাহ মখদুম ও পশ্চিম পাশে ডাম্ব ফেরী কর্ণফুলি ও রাণীক্ষেত রাখা হয়েছে। ২ নম্বর ফেরি ঘাটে এলোমেলো করে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে রাখা হয়েছে। ঘাটটি যান চলাচলের উপযোগী নয়। ১ নম্বর ফেরি ঘাটে বিআইডব্লিউটিসির একটি ফেরি রাখা হয়েছে। ১ নম্বর ফেরি ঘাটের পাশের লঞ্চ ঘাট এবং লঞ্চ ঘাটের পূর্ব পাশে পদ্মা নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে একাধিক ফেরি। শিমুলিয়া ঘাট থেকে শুধু লঞ্চ চলায় যাত্রীরা লঞ্চে চড়ে পদ্মা নদী পারাপার হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামীকাল সোমবার অথবা মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে (ট্রায়াল) ফেরি ছাড়ার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। 

তিনি আরও বলেন, শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে ফেরি ট্রায়াল হিসেবে ছাড়া হবে। তবে কখন শুরু করা হবে এটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। যখন ছাড়া হবে তখন আপনারা জানতে পারবেন।

বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী পরিচালক (বন্দর ও নৌ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, পদ্মায় স্রোত ও পানির উচ্চতা অনেকটা কমে এসেছে। পানি কম থাকায় আপাতত ডাম্ব ও রো রো ফেরি চলবে না। শুধু কে-টাইপের ফেরি চলবে। যদি সফলভাবে ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয় তাহলে আগামীকাল সোমবার থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফেরি চলাচল শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।

শরীয়তপুরের মাঝিকান্দিঘাট চালুর বিষয় জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন জানান, মাঝিকান্দি থেকে শিমুলিয়া নৌপথে ডুবোচরের নানা সমস্যা আছে। ওখানে ড্রেজিং করলেও ফেরিঘাট প্রস্তুত করা যাচ্ছে না। মাঝিকান্দি ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ১৬ ফুটের, কোনোটা আবার ১২ ফুটের। এটা একমুখী সড়ক। এ সড়ক দিয়ে গাড়ি আসা-যাওয়া সম্ভব না। এ পথে ফেরি চালু করলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে। তাই মাঝিকান্দিতে আপাতত ফেরি চালুর সম্ভাবনা নেই।

এর আগে ২৪ দিনের ব্যবধানে পদ্মা সেতুর তিনটি পিলারে চারবার ফেরির ধাক্কা লাগে। পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে দুর্ঘটনা এড়াতে গত ১৮ আগস্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এই নৌপথে ফেরি পুরোপুরি বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া হয়ে রাজধানী ঢাকায় যেতে হচ্ছে। এতে দ্বিগুণের বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। একই সঙ্গে ফেরি পারাপারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

বর্তমানে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রী পারাপারে একমাত্র ভরসা লঞ্চ। উত্তাল পদ্মায় অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ছোট লঞ্চে ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ি দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাও সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করছে। দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে লঞ্চ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে।

ব.ম শামীম/আরএআর