ঝিনাইদহে আদালতের মালখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার (০৩ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মালখানায় ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

এতে মালখানার কর্মরত চারজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম (২০) নামে একজন মিস্ত্রি মারা যান। বাকিদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। 

জানা গেছে, দুপুরে ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মালখানায় গণপূর্ত বিভাগের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান আদালতে উপস্থিত লোকজন। তারা ছুটে এসে দেখতে পান মালখানার দরজা, জানালা ভেঙে পড়েছে এবং ভেতরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সেখান থেকে আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহদের মধ্যে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি শফিকুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। তবে কীভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এখনও জানাতে পারেননি। 

এদিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনায় ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজন্ত বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশারকে প্রধান করে আলাদাভাবে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইদহ লেদ-গ্রিল ইঞ্জিনিয়ারিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. লিটন হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, রোববার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মালখানায় আমাদের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। হঠাৎ সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন শফিকুল ইসলাম। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাষ্টসাগড়া গ্রামের মো. বশির শেখের ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলার ভগবান নগর গ্রামের লতা বিশ্বাসের ছেল রাজীব হোসেন (৩৬), আড়ুয়াকান্দি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে সুস্তফা (১৮) এবং উত্তর কাষ্টসাগড়া গ্রামের আসাদকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন মারা গেছেন। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য আমি ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো তাদের কোনো আর্থিক সহযোগিতা করা হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কীভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরএআর