গ্রাহকদের ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এহসান সংস্থার চেয়ারম্যান মুফতি তাহের নদভীসহ ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যশোরে আরও ছয়টি মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী পাঁচ গ্রাহক রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা করেন।

রোববার বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মারুফ আহমেদ অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আসামিদের প্রতি সমন ইস্যুর আদেশ দিয়েছেন। এর আগে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এহসান সংস্থার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে তিনটি ও কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী গ্রাহকরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের সাদেক আলীর স্ত্রী মনজিলা বেগম, বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের ছেলে মকছেদ আলী, চাঁচড়ার আব্দুল গফুর মোল্যার ছেলে মাসুদুর রহমান, শহরের শংকরপুর আশ্রম রোডের মৃত সেখ আমিন উল্লাহর ছেলে সেখ রহমত উল্লাহ ও তার স্ত্রী আফরোজা বানু। 

এর মধ্যে মাসুদর রহমান সাড়ে ছয় লাখ টাকা, মনজিলা বেগম আট লাখ ৮০ হাজার, মকছেদ আলী ছয় লাখ ২০০, সেখ রহমত উল্লাহ পাঁচ লাখ ৩০ হাজার এবং আফরোজা বানু একটি মামলায় নয় লাখ ৬৫ হাজার ও আরেক মামলায় দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, সংস্থাটির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মুফতি আবু তাহের নদভী, প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপক মাগুরা সদর উপজেলার সাজিয়ারা গ্রামের কাজী রবিউল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মাগুরা সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা জুনায়েদ আলী, পরিচালক মাগুরা সদর উপজেলার রাউতলা গ্রামের আজিজুর রহমান, পরিচালক কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার লক্ষ্মীধরদিয়াড় গ্রামের মঈনউদ্দিন, পরিচালক খুলনার লবণচরা হরিণটানা রিয়াবাজার এলাকার মুফতি গোলাম রহমান, পরিচালক গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলার চরমাটিন এলাকার আব্দুল মতিন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার খুবদিপুর এলাকার আমিনুল হক, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লিচুবাগান জামালখান রোডের কলিমুল্লাহ কলি, পরিচালক খুলনার খানজাহান আলী থানার শিরোমণি এলাকার মিজানুর রহমান, পরিচালক যশোর সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের মুফতি মো. ইউনুস আহম্মেদ, পরিচালক খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মরল এলাকার মনিরুল ইসলাম, পরিচালক মাগুরা সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী, পরিচালক যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধান্যপুড়া গ্রামের সামসুজ্জামান টিটু, যশোর শাখার ব্যবস্থাপক মাগুরা সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আতাউল্লাহ, যশোরের কেশবপুর উপজেলার বেতিখোলা গ্রামের আব্দুল হালিম, মাঠকর্মী যশোর শহরের কারবালা রোডের সিরাজুল ইসলাম (সোনা মিয়া), উপশহর এ-ব্লক এলাকার শামসুর রহমান, সমন্বয়কারী সেক্রেটারি যশোর শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার বাবর আলী, একই এলাকার আব্দুল হক, শার্শা উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের এস এম সেলিম উল চৌধুরী, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাটি গ্রামের মোকসেদ আলী এবং যশোর শহরতলির রামনগর এলাকার বাসিন্দা মুফতি ফুরকান আহমেদ।

এই বিষয়ে জানতে মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী গ্রাহক যশোর সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের মকছেদ আলী বলেন, এহসান গ্রুপ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের টাকা আত্মসাত করেছে। সবার থেকে টাকা নিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, সহকারী শিক্ষক, বেসরকারি চাকরিজীবী, প্রবাসী ও শ্রমজীবী- সবাই এহসান গ্রুপের শিকার। পরকালে মুক্তির দোহাই দিয়ে সুদবিহীন উচ্চ মুনাফার কথা বলে হাজার হাজার মানুষকে নিঃস্ব করেছে গ্রুপটি। লগ্নি করা টাকার দ্বিগুণ ফেরত দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের করেছে। তাই যশোরে এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বিরুদ্ধে মামলা করেছি। 

জাহিদ হাসান/ওএফ