কাঁদতে কাঁদতে আদালত থেকে বের হলেন সেই নারী
আদালত প্রাঙ্গণে নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রীরা
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার সেই নারী (৩৭) আদালত থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হন। সোমবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে বের হন।
বের হয়ে আদালত প্রাঙ্গণে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ যে রায় দিয়েছে তাতে আমি খুশি নই। আমি তাদের ফাঁসি চেয়েছি। যদি আদালত ফাঁসি দিতেন তাহলে আমি কাঁদতে কাঁদতে বের হতাম না।
বিজ্ঞাপন
আদালত প্রাঙ্গণে নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী ও গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ঘটনাটি সারা দেশের আলোচিত ঘটনা। আজ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা খুশি। আমরা চাই আর কোনো নারী যেন এভাবে নির্যাতনের শিকার না হন এবং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন।
এর আগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
সোমবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন মামলার রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন দেলোয়ার-বাহিনী প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম। আসামিরা উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। ১ বছর পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় হলো।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুনুর রশীদ লাবলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, গৃহবধূ ধর্ষণ মামলাটিতে আমরা আদালতে সাক্ষী, জেরা ও জবানবন্দি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন এবং আসামিপক্ষে তিনজন সাক্ষ্য দেন।
আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে উভয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা।
৪ অক্টোবর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই নারী পুলিশ ও মানবাধিকার কর্মীদের জানান, বিবস্ত্র করে নির্যাতনের আগে অভিযুক্ত দেলোয়ার তাকে ২ দফায় ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করেন নির্যাতিত নারী।
হাসিব আল আমিন/এমএসআর/জেএস