মা ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে চাঁদপুরের নৌ-সীমানায় সোমবার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। ফলে চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা এখন জেলে শূন্য। এর ফলে চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ বড়স্টেশন মাছঘাট এখন জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য আড়তে মাছের আমদানি না থাকায় অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত মাছের আড়ৎ এখন একেবারেই ফাঁকা। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। যারা এখনো এ পেশায় আছেন, তারা মাছঘাটে খেলে-বসে সময় কাটাচ্ছেন।

এদিকে চাঁদপুর জেলা ট্রাস্কফোর্সের উদ্যোগে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। সোমবার মধ্যরাত থেকে নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ।  

তিনি বলেন, অভয়াশ্রমের ২২ দিন নদীতে কোনভাবেই জেলেদের নামতে দেওয়া হবে না। চাঁদপুরে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের শ্রমিক রফিকুল বলেন, ঘাটে মাছ আসলে আমরা ভালো থাকি। এখন মাছ নেই, আমরা ভালো নেই। বসে বসে সময় পার করছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন কাজে চলে গেছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আমাদের কাজ আবার শুরু হবে।

বড়স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী রুবেল গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার (০৩ অক্টোবর) পর্যন্ত মাছঘাটে ইলিশের আমদানি ভালো ছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইলিশ কিনতে এখানে মানুষ এসেছেন। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর ঘাটে কোনো ক্রেতা আসে না। মূলত সবাই ইলিশের জন্যই ঘাটে আসে। কোনো ব্যবসায়ী এখন প্রয়োজন ছাড়া ঘাটে আসবে না।


চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে এখন মাছ ধরা নিষেধ। এর আগে আৎগুলোতে আমরা প্রচুর ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি করেছি। অভয়াশ্রম থাকার কারণে আমাদের মাছ কেনা-বেচা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পুরো আড়ৎই এখন মাছশূন্য। 

শরীফুল ইসলাম/আরআই