নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি কাশবনে আগুন দিয়ে দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে কাশবন। সোমবার (০৪ অক্টোবর) রাতে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, প্রতিদিন এখানে শত শত মানুষ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসত কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে হাজারো দর্শনার্থীদের ঢল নামত কাশবনে। সোমবার রাতে কাশবনের মাঠে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে কাশবন কেনা শ্রমিক ও মালিকের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ভবনাথপুর ও কান্দারগাঁও এলাকার কাশবনটি প্রতিবছরের মতো এবারও ক্রয় করেন বরিশালের ভোলা জেলার জাহাঙ্গীর সরদার। তারা কাশবন কেটে বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করেন। কাশগাছ পানের বরজের মাচায় ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জাহাঙ্গীর সরদার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কাশবনের একাংশ ক্রয় করে ১৮ জন শ্রমিক দিয়ে ১৪ দিন ধরে কাশবন কেটে শুকাচ্ছিলেন। 

সোমবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত আগুন ধরিয়ে দিলে নিমিষেই তাদের কেটে রাখা কাশবনসহ পুরো বনে আগুন ধরে যায়। পরে শ্রমিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

কাশবন কাটতে আসা শ্রমিকরা জানান, স্থানীয় কান্দারগাঁও এলাকার একজন রাজনৈতিক নেতার একদল যুবক কাঁশবনে আগুন দিয়েছে। শ্রমিকরা বাধা দিলে তাদের প্রচণ্ড মারধর করে চলে যায়। দুর্বৃত্তদের নাম না জানলেও তাদের দেখলে চিনতে পারবেন বলে জানান শ্রমিকরা।

এলাকাবাসী জানান, কাশবন এলাকায় প্রচণ্ড ধোঁয়া দেখে আমরা আসি। ততক্ষণে শ্রমিকরা আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ কাশবনটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে সপরিবারে অনেক পর্যটক আসে। আগুন দেওয়ায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের যেমন ক্ষতি হয়েছে তেমনি নিরাপত্তার অভাবে এলাকায় পর্যটক আসা কমে যাবে। কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসায় এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হয়। 

 শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন ৬০০ টাকা হাজিরায় তারা ভোলা থেকে এসে এখানে কাজ করছেন। ১৪ দিনে তাদের খোরাকি ছাড়া কিছুই পাননি। আগুন দিয়ে মহাজনের যে ক্ষতি করেছে এতে তাদের পরিশ্রমের টাকা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তারা জানান, মানুষ এত নিকৃষ্ট কাজ করতে পারে ভাবা যায় না। আমরা তো কোন দোষ করিনি, তারপরও কেন আমাদের রুটিরুজির পরিশ্রমের পয়সা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হলো।

শেখ ফরিদ/এসপি