পাবনার ফরিদপুরে বিএনপি নেতার ছেলেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত করার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।

গত বুধবার (৬ অক্টোবর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পাবনা জেলা শাখার অন্তর্গত ফরিদপুর উপজেলা শাখা ও ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের অধিকতর তদন্তের স্বার্থে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। 

কমিটির দুই সদস্য হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুরাদ হায়দার টিপু ও উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. ইমরান শেখ। কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। আমরা চিঠি পেয়েছি। সরকারি কার্যদিবসের সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি আসার পর কাজ শুরু হবে।

তদন্ত কমিটির সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ইমরান শেখ বলেন, কমিটির আরেকজন সদস্য রয়েছেন। তার সঙ্গে কথা বলে আমরা একটা তারিখ নির্ধারণ করে পাবনায় যাব। সেখানে সরেজিমনে বিভিন্ন তথ্য সূত্রের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের তদন্ত করব। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।

প্রসঙ্গত, সম্মেলন ছাড়াই ত্যাগী কর্মীদের বঞ্চিত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের সন্তান জাহিদ হাসানকে পাবনার ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে গত ৫ অক্টোবর ঘোষণা দেয় জেলা ছাত্রলীগ। এ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে সমালোচনা।

জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও ফরিদপুর পৌর মেয়র খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ ও ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির ফয়সাল অভিযোগ করেন, জাহিদ হাসান ছাত্রলীগের কোনো ইউনিটের সদস্যও ছিল না। ত্যাগী কর্মীদের কোনো সুযোগ না দিয়ে জেলা ছাত্রলীগ অর্থের বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের সন্তানদের কাছে কমিটি বিক্রি করেছে। তদন্তের মাধ্যমে তারা এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল দাবি করেন। 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক অর্থেও বিনিময়ে কমিটি গঠনের বিষয়টি অস্বীকার করেছিল। বর্তমান ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান নিজেদেরকে আওয়ামী পরিবারের বলে দাবি করেছিল। তাদের কথা ছিল পদ বঞ্চিতরা অপপ্রচার চালাবে এটাই স্বাভাবিক। জাহিদ হাসানের ভাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে দাবি অভিযুক্তদের।

এ নিয়ে গত ৬ অক্টোবর ঢাকাপোস্টে বিএনপি নেতার ছেলে ছাত্রলীগের সম্পাদক, এলাকায় তোলপাড় শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

রাকিব হাসনাত/এমএএস