ভোলায় বেকার হয়ে পড়া ১০ জনকে সবজিসহ দেওয়া হয় ভ্যানগাড়ি বিতরণ

‌‘আগে রিকশা চালাইতাম, হোডেলে কাম করতাম, রাজেগোলগে থাকতাম। হেয়ার (এর) পরে অসুস্থ হইয়া কাজ কাম করতাম পারি না। স্যারেরা ভ্যান দিছে কাঁচা তৈরি তরকারি দিছে, আল্লায় যদি চায় এইডা দিয়াই সংসার চালামু।’

এভাবেই বলছিলেন ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরসিফলি গ্রামের মোতাহার বেপারি। শুধু মোতাহার বেপারি নয়, একই রকম হাসি ফুটেছে ১০ জন কর্মহীন মানুষের মুখে।

ভোলা সদর উপজেলায় করোনাকালীন কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া ১০ জনকে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জনপ্রতি একটি ভ্যানগাড়ি ও ১২৫ কেজি সবজি বিতরণ করেছে ভোলার কাঞ্চন-ফাতেমা নামের একটি ফাউন্ডেশন।

সম্প্রতি ভোলার ইলিশা সড়কে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন কার্যালয় থেকে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবু ভ্যানগাড়ি বিতরণ করেন।

এ সময় সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ১০ জন বেকার মানুষের মাঝে একটি ভ্যানগাড়ি, ২০ কেজি আলু, ২০ কেজি মিষ্টি কুমড়া, ২০ কেজি কচুর ছড়া, ২০ কেজি পেঁপে, ১০ কেজি লাউ, ১০ কেজি মুলা, ১০ কেজি পেঁয়াজ, ঢেঁড়স ৫ কেজি, ৫ কেজি মরিচ, ও ৫ কেজি রসুন বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

সুবিধাভোগী পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ড গুপ্তমুন্সি গ্রামের খালেক মিয়া বলেন, ‘আগে ভ্যান ভাড়া লইয়া কাঁচামালের ব্যবসা করতাম। পুঁজিপাট্টা নাই এহন অসহায় হইয়া পড়ছি বুড়া মানুষ কেউ কামেও লয় না। হেড়া যা দিছে শুকোর আলহামদুলিল্লাহ।’

রাজাপুর ইউনিয়ন মিজিবাজার এলাকার সুবিধাভোগী দুলাল বলেন, নদীতে জেলের কাজ করতাম। নদীর পাড়ে বাড়ি থাকায় মেঘনায় বাড়িতা লইয়া গেছে। করতাম ছুডা কাম, করোনা আইয়া হেইডাও লইয়া গেল। পরে স্যারেগো খোঁজ পাইয়া যোগাযোগ করলে হেরা ভ্যান ও তরকারি দিছে। আশা করি এইডি বেইচা সংসার চালাইতে পারমু।’

এদিকে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবু  জানান, আমার চাচা কাঞ্চনমিয়া ও চাচি ফাতেমার নামে এই ফাউন্ডেশনের নামকরণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভোলায় অসহায় সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফোটানো জন্য নানান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আমরা কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এর আগেও করোনাকালীন অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। বর্তমানে যারা কর্মস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে এ রকম দরিদ্র ১০ পরিবারের জন্য ১০টি ভ্যান ও কাঁচামাল হিসেবে ১২৫ কেজি সবজি দিয়েছি। যাতে এগুলো বিক্রি করে তাদের সংসার চালাতে যাতে সুবিধা হয়।

ইমতিয়াজুর রহমান/এমএসআর