চেক জালিয়াতি করে যশোর শিক্ষা বোর্ডের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় দুদক যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাতের নেতৃত্বে একটি টিম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় দুদক অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী আর রেজা।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার নয়টি চেক ইস্যু করে। এই নয়টি চেক জালিয়াতি করে ‘ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ১০ টাকা এবং ‘শাহীলাল স্টোর’ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান ৬১ লাখ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে।

সরকারি ছুটি থাকায় ঘটনা প্রকাশ্যে আসার দুই দিন পর রোববার বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী আর রেজা দুদক কার্যালয়ে গিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে দুদক কর্মকর্তারা বোর্ডে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। দুদক কর্মকর্তারা সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এদিকে চেক জালিয়াতির ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শিক্ষা বোর্ডের হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম পালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন।

তিনি জানান, কিছু না জানিয়ে আজ অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন আব্দুস সালাম। জানতে পেরেছি পরিবারসহ তিনি বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। যে দুটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে তাদের মালিকেরা বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা ফিরিয়ে দেবেন বলে খবর পাঠাচ্ছেন। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। টাকা ফেরত দিলেও তা আদালতের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হবে।

বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী আর রেজা বলেন, রোববার আমরা দুদকে একটি অভিযোগ দিয়েছি। দুদক কর্মকর্তারা সেটি গ্রহণ করেছেন।

দুদক যশোরের উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, শিক্ষা বোর্ড থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তারা সেটি ঢাকায় প্রধান কার্যালয়কে অবহিত করে তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

শিক্ষা বোর্ড এমপ্লইজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম এর আগেও অনেক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১২ লাখ টাকার একটি দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই সময় তদবির করে তিনি সেখান থেকে রক্ষা পান। এখন আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির সঙ্গেও তিনি জড়িত বলে নাম আসছে।

জাহিদ হাসান/এমএসআর/জেএস