রাস্তার মোড়ে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেহগনিগাছটি ছায়া দিয়ে আসছে ৪ দশক ধরে। গাছটির পশ্চিম দিকে সম্প্রতি গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক একটি বেসরকারি হাসপাতাল। গাছটির অবস্থান মূল ফটকের সামনে হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছুটা সমস্যা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেহগনিগাছটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাটতে গেলে বাধা দেয় স্থানীয়রা। বুধবার (১৩ অক্টোবর) ভোর রাতে শহরের ম্যাক্স হাসপাতালের সামনে থাকা গাছটি স্থানীয়দের বাধার মুখে কাটতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের দাবি, দিনের বেলা কাটতে না পেরে ভোর রাতে গাছটি কাটতে শুরু করে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।

ভোর রাতেই মোড়ের দোকানদাররা বিষয়টি জানতে পেরে বাধা দিলে গাছ কাটা বন্ধ হয়। কিন্তু তার আগেই গাছের মূল দুটি ডাল কাটা হয়ে যায়। সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুটি মূল ডালের খড়ি ও কাঠ সরিয়ে নিলেও তখনও একটি বড় ডাল পড়ে আছে। এমনকি হাসপাতালের দিকের সবচেয়ে বড় ডাল কেটে নেওয়া হয়েছে। 

গাছটির ছায়াতে আশ্রয় নিয়ে ডাবের ব্যবসা করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের মসজিদপাড়ার ফরহাদ হোসেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও গাছের কয়েকটি বড় ডাল কাটা হয়েছে। বুধবার ভোর রাতে ম্যাক্স হাসপাতাল মিস্ত্রি ভাড়া করে গাছটি কাটা শুরু করে। দুটি বড় ডালও কাটা হয়ে যায়। পরে এখানকার দোকানদাররা জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে গাছ কাটা বন্ধ হয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল, সকালের আগেই গাছটি কেটে ফেলার।

স্থানীয় বাসিন্দা চা দোকানি আব্দুর রাজ্জাক জানান, জন্মের পর থেকে গাছটি ৩ রাস্তার মোড়ে দেখছি। সরকারি রাস্তার মাটিতে পৌরসভার গাছ এটি। অথচ কয়েকমাস আগে ম্যাক্স হাসপাতাল হয়েছে। নিজেদের সুবিধার জন্য এতো বড় একটি গাছ কেটে সাবাড় করছে। অথচ আমরা জানি, সরকারি গাছ অনুমতি ছাড়া কেউ কাটতে পারে না।

মুঠোফোনে ম্যাক্স হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইসমাইল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাছটি পৌরসভার। তাই পৌর মেয়রের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গাছটির কিছু অংশ কাটা হয়েছে। এদিকে, ম্যাক্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, ম্যাক্স হাসপাতালের সামনের গাছ কাটার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ সময় মেয়রের সামনেই হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইসমাইল হোসেনকে ফোন দিলে তিনি আবার বলেন, পৌর মেয়রের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে তা পুনরায় অস্বীকার করেন মেয়র।

জাহাঙ্গীর আলম/এমএসআর