ঠাকুরগাঁওয়ে শুক নদীর তীর বুড়ির বাঁধে অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত

প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীর তীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার উৎসব। রাতে বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় এই মাছধরা উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

মাছ ধরতে ব্যস্ত সবাই। মানুষের ভিড়ে পুরো এলাকায় একটি উৎসবমুখর পরিবেশ হয়ে উঠেছে। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে এসেছেন এই উৎসবে যোগ দিতে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী-পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল।

প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছধরার উৎসব

যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছে। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।

জানা যায়, ১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর ওপর একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়।

জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে মাছের পোনা ছাড়া হয়। শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছধরার উৎসব।

সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন আব্দুল হাই। তিনি বলেন, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে রাতে এখানে এসেছি। পুঁটি মাছ, গুঁড়া মাছ জালে আটকা পড়তে দেখেছি। তবে গতবারের মতো এবারে তেমন কোনো মাছ নেই।

রায়পুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে এসেছেন খালেক মিয়া। তিনি বলেন, সকাল থেকেই মাছ ধরছি। জাল নিয়ে আমরা কয়েকজন এসেছি। মাছ ধরা পড়ছে না। কারণ অনেক মানুষ জাল ফেলেছে, সেই সঙ্গে পানি একটু বেশি। তারপরও চেষ্টা করছি।

শহরের আশ্রমপাড়া থেকে মাছ কিনতে এসেছেন আশিক। তিনি বলেন, প্রতিবারেই এখানে মাছ কিনতে আসি। কিন্তু এখানে অনেকে বাইরে থেকে মাছ নিয়ে এসে বিক্রি করছে।

ঠাকুরগাঁও আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষ মাছ ধরছেন। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এখানে উৎসবে পরিণত হয়। আমরা চেষ্টা করি যাতে করে এখানে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।

নাহিদ রেজা/এমএসআর