কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ব্যাপক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে উপজেলার 'গ' তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা পরিষদ গেটে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, কুমারখালীতে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে প্রজ্ঞাপনবহির্ভূত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের সাক্ষী উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাদের সরাসরি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। সাক্ষীদের লিখিত সাক্ষ্য ও স্বাক্ষর মূল্যায়ন করা হয়নি। ইউএনও নিজে দায়িত্ব পালন না করে সমাজসেবা অফিসার দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং যাচাই-বাছাইয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বাদ পড়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যাচাই-বাছাইয়ের সময় যুদ্ধাকালীন তথ্য-উপাত্ত ও যুদ্ধাকালীন দলিল না মেনে অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত ফল প্রকাশ করেছেন। গেজেট, নম্বর, নাম, জন্মতারিখ, মা-বাবার নাম ইত্যাদি ভুল। এতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানি করা হয়েছে। এ ছাড়া যাচাই-বাছাই কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে অসৎ আচরণ করেছে।

আগের যাচাই-বাছাই কমিটির ‘ক’ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গ’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং যাচাই-বাছাই কমিটির ফলাফল বাতিল করে প্রজ্ঞাপন অনুসারে নতুন করে কমিটি গঠন করা হোক এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে এই কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হোসেন।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল বারী, গনি উদ্দিন, সরদার আব্দুল খালেক, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান হাসান মাহমুদ, রেজাউল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক বিতান কুমার মন্ডল বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়নি। জামুকার নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই হয়েছে। তবু কারও সন্দেহ হলে তাদের আপিল করার সুযোগ আছে।

তিনি আরও বলেন, যাচাই-বাছাই কমিটিতে সমাজসেবা অফিসার ছিলেন না। তিনি শুধু নথিপত্র সংরক্ষণ ও সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন।

রাজু আহমেদ/এনএ