মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে গত ২ দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাত এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের প্রভাবে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেওয়ায় আকস্মিক বন্যায় কুড়িগ্রামের প্রায় ২৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন ও উলিপুর উপজেলার থেতরাই, দলদলিয়া, গুনাইগাছসহ বজরা ইউনিয়নের ২৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। 

ঘরে ও বাহিরে সব খানেই বন্যার পানি থাকায় আতঙ্কে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রাত জেগেছেন অনেকেই। চুলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করতে না পেরে অনেকের সকাল থেকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ঝুঁকি নিয়েই পানিতে চলাচল করছেন। গবাদি পশুগুলো নৌকায় করে নিরাপদ স্থানে রেখেছেন।

থেতরাই ইউনিয়নের চর গোড়াইপিয়ার এলাকার নয়ন মিয়া বলেন, গতকাল সকাল থেকেই হু হু করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। পানিতে অনেক স্রোত রয়েছে। দুপুরের দিকে পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় এবং রাতেই আমার বাড়িসহ এলাকার অন্তত ৬শ বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। 

উলিপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উলিপুরের থেতরাই, দলদলিয়া, গুনাইগাছসহ বজরা ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী এসব পরিবারের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যা আজকেই তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। আমরা এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলতেছি। 

রাজারহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিম জানান, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এসব গ্রামের অন্তত ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে আজ পানি নেমে যাওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন রোধে এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। 

জুয়েল রানা/আরআই