সীমান্তবর্তী গ্রামের মাঝখানে একটি বাড়ির সামনে বেঞ্চে বসে আছেন নির্বাচন অফিসার ও পুলিং এজেন্ট। এক লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা ভোট দিতে আসছেন। প্রিসাইডিং অফিসার সিল ও ব্যালট পেপার ভোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

ভোটাররা পাশের গোপন ঘরে গিয়ে ব্যালটে সিল মেরে বক্সে ফেলছেন আর হাসিমুখে একে একে চলে যাছেন। প্রার্থী বাছাইয়ে ইউপি নির্বাচনের আগে এমন ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচনের ঘটনা ঘটছে দিনাজপুর বিরামপুর উপজলার উত্তর দাউদপুর গ্রামের বেপারীপাড়ায়।

বেপারিপাড়ার সহিদুল ইসলাম জানান, ‘তৃতীয় ধাপে ২ নং কাটলা ইউনিয়নের ২৮ নভেম্বর নির্বাচন হবে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বেপারীপাড়া থেকে ইউপি সদস্য পদে মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও বকুল হাসান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন। দুইজনই আমাদের প্রিয়।

তিনি আরও জানান, একই পাড়ার দুইজন প্রার্থী হওয়ায় প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়েছি। ফলে নিজেদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে ও আমাদের পাড়া থেকেই যাতে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয় এজন্য প্রবীণদের সিদ্ধান্তে দুই প্রার্থীর একমত পোষণ করায় একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য প্রার্থী বাছাইয়ে ভোটের ব্যবস্থা করি।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় গ্রামের মোস্তাক হাসানের বাড়ির সামনে প্রার্থী বাছাইয়ের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় গ্রামর ১২৭ জন পুরুষ ভোটার অংশগ্রহণ করেন। ব্যতিক্রমধর্মী এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে খুশি ভোটাররা।

প্রাক-নির্বাচন বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা গোলাপ হাসন জানান, সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোটারদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্য ১২৭ জন পুরুষ ভোটার ভোট দেন। ভোটে মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী বকুল হাসান ৪৯ ভোট পান। আর ৬টি ভোট নষ্ট হয়। ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ছে।

বেপারিপাড়ার হাসান আলী জানান, ‘এমন ভোটের কথা জীবনে শুনি নাই। এই প্রথম আমাদের পাড়ায় এমন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।আমরা পাড়ার ভোটাররা আনন্দ-উৎসবের মধ্যে দিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করলাম।’ 

প্রাক-নির্বাচন অংশ নিয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থী বকুল হাসান বলেন, ‘গ্রামর সব মানুষ আমাকে সমর্থন দেননি। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আমার কোনো অভিযাগ নেই। ফলাফল মেনে নিয়ছি। মোস্তাফিজুর ভাইয়ের সঙ্গে নির্বাচনে একসঙ্গে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করব।’

প্রাক-নির্বাচন অংশ নিয়ে বিজয়ী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আমাকে এলাকাবাসী প্রাক-নির্বাচনে বিজয়ী করেছেন। নির্বাচনের বিজয়ী হয়ে তাদের মনের আশা পূরণ করব ইনশাআল্লাহ।’

এমএসআর