ওসমানী মেডিকেলে রোগীর বাবাকে পেটানোর অভিযোগ!
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর এক বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে আহত করেছে আনসার সদস্যরা। গত ২৩ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটলেও চিকিৎসাধীন থাকায় সেবা পেতে ভোগান্তি হবে জেনে কাউকে জানাননি তিনি।
তবে সরকারের একটি সেবাদানমূলক প্রতিষ্ঠানে এভাবে আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারধরে আহত হওয়ায় এবং মানহানির বিচার চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। অভিযোগের একটি অনুলিপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের কাছেও দিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী রোগীর বাবা সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, দুই সপ্তাহ থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি। গত ২৩ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসকরা পরিদর্শনের সময় নার্স আমার স্ত্রীকে জানান রোগীর ড্রেসিংয়ের জন্য হ্যান্ড গ্লাভস বাইরে থেকে নিয়ে আসার জন্য। আমার স্ত্রী বিষযটি জানালে আমি দ্রুত বাইরে থেকে হ্যান্ড গ্লাভস কিনে ওয়ার্ডের ভেতরে নিয়ে যেতে চাইলে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা আমাকে বাধা দেন। ভেতরে আমার মেয়ে চিকিৎসাধীন দ্রুত যেতে হবে জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার সদস্য রুবেল, আল আমিন ও হাবিব আমাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করলে মারধরের পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। পরে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে আমাকে উদ্ধার করেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ভুক্তভোগী রোগীর বাবা বলেন, সরকারের একটি সেবাদান প্রতিষ্ঠানে এভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হবে কল্পনাও করিনি। আমি রোগী নিয়ে দুই সপ্তাহ থেকে হাসপাতালে অবস্থান করায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, তার ওপর আনসার সদস্যদের মারধরের কারণে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
ভুক্তভোগীর মেয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়ে যাবেন ভেবে ঘটনাটি প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন। এমনকি লোকলজ্জার ভয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতেও পারছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবুল কালাম বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। প্রতিদিন অসংখ্য অভিযোগ আসে এর মধ্যে এ অভিযোগ থাকলেও সেটা ভালো করে দেখা হয়নি।
তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এখানে দু’পক্ষের দোষ থাকতে পারে। আনসার সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা লিখিত অভিযোগ হাতে এলে তদন্ত করে দেখা যাবে।
আনসার ভিডিপি সিলেট জেলা কমান্ড্যান্ট এনামুল খান বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। রোগীর স্বজনকে এভাবে মারধর মোটেই কাম্য নয়। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের একটি অনুলিপি আমার বরাবরে পাঠালে অবশ্যই তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, ওসমানী হাসপাতাল ক্যাম্পে কর্মরত আনসার সদস্যদের প্রায়ই এ বিষয়টি বলা হয়, রোগী এবং তাদের স্বজনদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে। এরপরও এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
তুহিন আহমদ/এমএএস