রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীরা। তাদের দাবি, প্রার্থী পরিবর্তন করা না হলে নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবিসহ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. মাহফুজার রহমান। এ সময় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে মনোনয়নবঞ্চিত কাউনিয়া আওয়ামী লীগের সদস্য আতাউর রহমান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদিকা সঙ্গীতাও একই অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে ডা. মাহফুজার অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি পরাজিত হয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে তিনি ওই সময় থেকে মাঠ গোছানো, প্রচার-প্রচারণাসহ সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের ছয়জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও শেষ পর্যন্ত চারজন মনোনয়নের জন্য আবেদন করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আলী বাবুকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেন। অথচ দল সমর্থিত ইয়াসিন আলীর নামে মাদরাসার জমি আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য ও অসহায় মানুষদের সরকারি সহায়তা নিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মনোনয়নবঞ্চিতরা দাবি করেন, ইয়াসিন আলী বাবু আসন্ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী করায় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের ভরাডুবিসহ ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। 

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মনোনয়নবঞ্চিতরা এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন। বাস্তবে এ রকমের কোনো লেনদেন হয়নি।

তিনি বলেন, চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে ডা. মাহফুজার রহমান গতবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। আমরা ডা. মাহফুজারের নাম এক নম্বরে রেখে কেন্দ্রে তালিকা পাঠিয়েছিলাম। প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আমাদের কোনো হাত নেই। এটি দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত।

উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপে দেশের ১ হাজার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ নভেম্বর। একই দিনে দেশের ১০টি পৌরসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ নভেম্বর। পৌরসভায় মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষ সময়ও একই । 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর