পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েই মোটরসাইকেল শোডাউনের অভিযোগ উঠেছে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আশিফ শামস রঞ্জনের বিরুদ্ধে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাতে শোডাউনকে নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফজলুর রহমান মাসুদ।

স্থানীয়রা জানান, ২১ অক্টোবর বেড়া পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় যুবলীগ নেতা রঞ্জনকে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর বুধবার দুপুরে বেড়া আসেন। ঢাকা থেকে আরিচা ঘাট হয়ে পাবনার কাজিরহাট ঘাটে উপস্থিত হন দুপুর ২টার দিকে।

এ সময় কাজিরহাট ঘাটে নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আসিফ শামস রঞ্জন বলেন, নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর প্রতীক ও উন্নয়নের প্রতীক। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে নৌকার বিজয় ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। পরে শতাধিক মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা নিয়ে বেড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন রঞ্জন ও তার সমর্থকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী আচরণবিধিতে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও শোডাউন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন বুধবার দুপুরে ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় ফেরা উপলক্ষে ব্যপক শোডাউনের আয়োজন করেন।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফজলুর রহমান মাসুদ বলেন, ঢাকা থেকে বেড়া উপজেলার কাজিরহাট ঘাটে এসেই আসিফ শামস রঞ্জন হাজার হাজার লোক নিয়ে সমাবেশ করেছেন। প্রতীক বরাদ্দের আগেই নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি স্থানীয় সংবাদপত্রেও নিজের ছবি নৌকা প্রতীক সম্বলিত বিজ্ঞাপন ছেপে ভোট চেয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মেয়র প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জনকে বার বার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রঞ্জনের বাবা পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেলে তার সমর্থকরা নির্বাচনী আমেজে তাকে বরণ করেন, সংবর্ধনা দেন। এটি প্রার্থীর জনপ্রিয়তার কারণে অনেক সময় সমাবেশে রূপ নেয়। এখানে প্রার্থীর কিছু করার থাকে না। লোক সমাগম করতে কাউকে ফোন দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এলাকায় নেই। সংসদে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ব্যস্ত আছি। এসব কাজে ফোন দেওয়ার মতো সময় আমার নেই। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

বেড়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি বজায় রাখতে শোডাউন বা এ ধরনের কর্মসূচি যাতে না হয় তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেউ যদি লঙ্ঘন করে থাকে তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর।

রাকিব হাসনাত/এসপি