মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট এলাকায় ব্যবসায়ী নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে ফুটেজটি ভাইরাল হয়। 

এর আগে রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় মাইক্রোবাস থেকে নেমে ধাওয়া করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট এলাকায় সড়কে ফেলে ব্যবসায়ী নাজমুল হাসানের দুই পায়ে কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী নাজমুল সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি মাইক্রোবাস থেকে নেমে হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করে। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে একদল দুর্বৃত্ত দা দিয়ে তার পায়ে কোপাতে থাকে। 

এ সময় ভাড়ায় আসা মাইক্রোবাস দ্রুত মৌলভীবাজারের দিকে চলে যায়। চারজন পায়ে কোপানোর সময় একজন আবার ব্যবসায়ীর মাথায় ও শরীরে লাথি মারতে তাকে। পরে তাকে অবচেতন অবস্থায় ফেলে দুর্বৃত্তরা পূর্ব দিকে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে চলে যায়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধলাই নদীর বালু ঘাট নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত দেড় মাসে এই দুই পক্ষের মধ্যে তিনবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। কমলগঞ্জ থানায়ও এ নিয়ে মামলা হয়েছে। তাছাড়া চৈত্রঘাট বাজারের দোকান ঘর নিয়ে নিহত নাজমুলের সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধ চলছিল। 

তবে আহত অবস্থায় ব্যবসায়ীকে সিলেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি মুঠোফোনে হামলাকারী চারজনের নাম প্রকাশকালে ভিডিও লাইভে বলেছিলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি রহিমপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তফাজ্জুল। এ নিয়ে তার সঙ্গে বিরোধের জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে কোপানো হয়েছে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের সময় ভাড়ায় আনা মাইক্রোবাস জব্দ করে চালক আমির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। সোমবার রাতে রাজনগর থেকে জুয়েল মিয়া নামে তালিকাভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে দুই আসামিকে 
মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। 

কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা দুই আসামিকে কারাগারে প্রেরণ ও মঙ্গলবার বিকেলে এ হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলায় অংশ নেওয়া বাকিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

ওমর ফারুক নাঈম/এসপি