খুলনার তেরখাদা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামে আলোচিত শিশু তানিশা হত্যা মামলায় সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জ‌রিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশু তানিশা আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মো. খাজা শেখের মেয়ে। আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর খাজা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার আট্রাকি গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলী শেখের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোবাইলে আসক্ত ছিলেন মুক্তা। বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ইমো ও ম্যাসেঞ্জারে কথা বলতেন তিনি। এ নিয়ে খাজা স্ত্রীকে সন্দেহ করেন।

চলতি বছরের ২ এপ্রিল ম্যাসেঞ্জারে ফারাবি প্রসেনজিত নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব ও কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে খাজা স্ত্রীকে তালাক দেওয়াসহ বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। খাজার ওপর প্রতিশোধ নিতে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মুক্তা। 

৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হত্যার উদ্দেশ্যে দা সংগ্রহ করে। দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত তানিশার ওপর আক্রমণ করে। দা দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করতে থাকে। ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে তানিশার দাদি দরজা খুলতে বললে খোলেননি মুক্তা। পরবর্তীতে তানিশার চাচা রাজু শেখ বাড়ি এসে দরজা খুলতে বললে মুক্তা বাইরে বের হয়। ঘরে ঢুকে তানিশার নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তানিশার দাদা মো. আবুল বাশার শেখ এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় মুক্তাকে আসামি করে মামলা করেন। এ বছরের ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম মুক্তাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মোহাম্মদ মিলন/এসপি