গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর হাসান আলী হত্যা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবুসহ ৮ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ৮ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলিপ কুমার ভৌমিক এ রায় দেন। এ সময় আদালতে ১৬ আসামির মধ্যে ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ প্রিন্স বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ২২ আগস্ট পলাশবাড়ী আদর্শ ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হাসান আলীকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় তার ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে ২৪ আগস্ট পলাশবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০০ সালের ৩১ মে ১৬ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ। চলতি বছরের ৩ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ প্রিন্স জানান, আব্দুল মান্নান নামে এক প্রফেসরকে পলাশবাড়ী আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে বেআইনিভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এ কারণে এলাকার জনগণ তার প্রতিবাদ করে। কিন্তু নজরুল ইসলাম লেবুসহ তৎকালীন জামায়াত-শিবিরের নেতারা প্রতিবাদী লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে জামাত-শিবিরের লোকজন গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর আমবাড়ী এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রফেসর আব্দুল মান্নানকে মারপিট শুরু করে।

এ সময় তার ভাই হাসান আলী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করা হয়। আহত অবস্থায় হাসান আলীকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একইদিন রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

এ মামলায় আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ ১৬ আসামির মধ্যে ১৩ আসামির উপস্থিতিতে ৮ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ৬ জন উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুজন পলাতক।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, এ মামলায় আসামিপক্ষ সন্তুষ্ট নয়। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি আমরা সেখানে ন্যায় বিচার পাব।

রিপন আকন্দ/এনএ/আরএআর/জেএস