অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করায় দলীয় নেতাকর্মীরা খুশি হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নিজের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে জাহাঙ্গীর যে অপরাধ করেছে, সেই অপরাধের শাস্তি সে পেয়েছে। এতে আমরা আওয়ামী পরিবারের লোক, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোক খুশি। শুধু গাজীপুরের নয়, সারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের লোক খুশি। এ সিদ্ধান্তের জন্য আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। 

মেয়র জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের পর শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে আজমত উল্লাহ খান এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগে অতীতেও কোনো বিভাজন ছিল না, এখনও নেই। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। এই দলের একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। সে গঠনতন্ত্র মাফিক দল পরিচালিত হয়। 

আজমত উল্লাহ খান বলেন, গাজীপুরের মানুষ এই সিদ্ধান্তে আনন্দিত। কারণ জাহাঙ্গীরের ওই বক্তব্যের পর তাদের অন্তরে জ্বালা ছিল। এর বহিঃপ্রকাশ গাজীপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয়ে গেছে। নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করছেন। 

এর আগে বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।

তীব্র সমালোচনার মুখে পরে এক ভিডিও বার্তায় মেয়র জাহাঙ্গীর দাবি করেন, ফেসবুকের ভিডিওটি সুপার এডিট করে প্রচার করে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। গাজীপুরের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে গাজীপুরে মেয়র সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় আওয়ামী লীগ। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে তাকে এর জবাব দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম। 

শিহাব খান/আরএআর