নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ছাত্রলীগের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে আড়াইহাজারের বাসিন্দা বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনুর বাড়ি ও তার মালিকানাধীন মার্কেটে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা করলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনুর স্ত্রী ও মহিলা দল ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার ও অনুর ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, ওই সময় উভয় পক্ষের গুলিতে তিন ছাত্রলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে তিন বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন রোববার বিকেলে আড়াইহাজার থানায় একটি অভিযোগ করেন। এতে ‍তিনি উল্লেখ করেন, ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করেন। রোববার (২৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রফিকুলকে সোনালী ব্যাংক আড়াইহাজার শাখায় সাত লাখ টাকা জমা দিতে পাঠান। পথে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন শাওনের নেতৃত্বে ৫/৬ জন পথরোধ করে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেধড়ক মারধর করে সঙ্গে থাকা সাত লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তাকে বাঁচাতে পূর্বপরিচিত শিকদার আলী এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে রফিকুলকে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাত লাখ টাকা ছিনতাই ও রফিকুল ইসলামকে মারধরের প্রতিবাদে আড়াইহাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি রোববার সন্ধ্যায় আড়াইহাজার বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও তার স্ত্রীর অনুসারী বিএনপি নেতাকর্মীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন শাওনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অনুর বাসভবন ও মার্কেটে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করতে থাকে। বাধা দিতে গেলে পারভীন আক্তারকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তিন ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু জানান, তার বসতবাড়ি ও মার্কেটে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। তিনি তার স্ত্রী ও ছোটভাইকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
রয়েছেন।

আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, আনোয়ার হোসেন অনুর ছোট ভাই রফিকুলের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে বিকেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি। ওই ঘটনার জেরে রাতে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এ সময় তিন ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সেখান থেকে বেনু, সাদ্দাম ও রাসেল নামে তিন বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

রাজু আহমেদ/আরআই