খুলনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী সোহান মোল্যাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) খুলনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক আশরাফ উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি সোহান ফুলতলা উপজেলার ডাউনকোনা এলাকার বাবুল মোল্যার ছেলে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম ইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক অভয়নগর উপজেলার কোটা পশ্চিমপাড়া এলাকার আতিয়ার শেখের মেয়ে সুমির সঙ্গে ফুলতলা উপজেলার বাবুল মোল্যার ছেলে সোহানের বিয়ে হয়।

এর ৬ মাস আগে সুমির সঙ্গে তার ফুফাতো ভাই মিন্টুর বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় তাদের সে সংসার ভেঙে যায়। দ্বিতীয় বিয়ের পর সুমি পূর্বের স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত মোবাইলে কথা বলত। যা নিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রায় কলহ লেগে থাকত।

২০২০ সালের ১ মার্চ সুমি তার ছোট ভাই সুমন শেখের সঙ্গে বাবার বাড়ি চলে আসে। এর ৮ দিন পর নিহতের শ্বাশুড়ি ফোন করে বাড়ি চলে আসতে বললে বড় ভাই সুজন শেখকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে আসে সে। ওই দিন রাতে সুমি মোবাইল ফোনে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলা অবস্থায় সোহান মোল্যার হাতে ধরা পড়ে।

জিজ্ঞাসা করা মাত্র সুমি তাকে মারতে উদ্ধত হয়। উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সোহান মোল্যা তার গলা টিপে ধরে। জ্ঞান হারিয়ে ফেললে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় সুমিকে। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বলা হয় সে বিষ খেয়ে মারা গেছে।

বিষয়টি নিহতে ভাইয়ের কাছে সন্দেহ হয়। তিনি ঘটনাস্থালে গিয়ে দেখেন সুমির গলার দু’পাশে লাল দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ওই মাসের ১০ তারিখে ফুলতলা থানায় সোহান মোল্যাসহ আরও অজ্ঞাতনামা তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৪ জুলাই ফুলতলা থানার এসআই বোরহান উদ্দিন সোহান মোল্যাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর