৩০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিবারই আমাদের ২৭ কেজি চাল দেওয়া হয়। চাল কমের বিষয়টি ডিলারকে জানালে কার্ড কেটে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমরা গরিব মানুষ কোথায় যাবো? বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এভাবেই অভিযোগ জানান আনছার খান নামে এক ব্যক্তি। একইভাবে ৩০ কেজির মূল্যে ২৭ কেজি চাল প্রদানের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন উপকারভোগী।

তেলিগাতী বাজার এলাকার আসাদ শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রায় সময় ১০ টাকা কেজির চালে কম দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন ডিলার মনিরুল ইসলাম।

এদিকে ডিলারের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে উপকারভোগী মানসিক প্রতিবন্ধী শরিফা আক্তারের মামাতো ভাই মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করেছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।

জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, আমার ফুপাতো বোন শরিফা আক্তার একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার দুটি সন্তান রয়েছে। প্রতি মাসে ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি চালে তার সন্তানদের খুব উপকার হতো। কিন্তু অক্টোবর মাসের চাল শরীফার স্বাক্ষর দিয়ে ডিলার মনিরুল ইসলাম উত্তোলন করেছেন। আমরা এই অনিয়মের বিচার চাই।

শরীফার আপন ভাই আল আমিন শেখ বলেন, আমার বোনের চাল স্বাক্ষর জাল করে ডিলার উত্তোলন করেছেন। প্রতিবন্ধী বোনের জন্য সরকারের এই সহযোগিতা নিয়মিত রাখার দাবি জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি কাউকে চাল কম দেইনি। শরীফা আক্তার একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে ফিঙ্গারিং করতে পারেন না। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার সুলভমূল্য কার্ড আরেকজন দরিদ্র মানুষকে দিতে বলেছেন। সেই কারণে দুই মাস ধরে শরীফা চাল পাচ্ছে না। এর আগে নিয়মিত চাল পেয়েছেন শরীফা এমন দাবি করেন এই ডিলার।

তেলিগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদা আক্তার শরীফাকে চাল দিতে নিষেধ করেছেন কি না বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, কোনো অবস্থাতেই ডিলার কাউকে চাল কম দিতে পারবে না। একজনের চাল অন্য কেউ তুলতেও পারবে না। কেউ এ ধরনের কাজ করলে সে অবশ্যই অপরাধী। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডিলার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে শুনানির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তানজীম আহমেদ/এসপি