ভোটের আগের রাতে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
সংঘর্ষে আহত একজন হাসপাতালে ভর্তি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের আগের রাতে ছুরিকাঘাতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌরসভার বটতলাহাট এলাকার জোসনারা ফাউন্ডেশন শিশু পার্কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও ২ যুবক আহত হন।
নিহত যুবক নামোশংকরবাটি মাউড়িপাড়া এলাকার হযরত আলীর ছেলে মো. আজিম (২১)। আহতরা হলেন নতুনহাট মন্ডলপাড়া এলাকার আব্দুল হাইয়ের ছেলে আব্দুল আলিম (১৬) ও বড়িপাড়া মহল্লার আব্দুস সাত্তারের ছেলে ইমন (১৮)।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে জোসনারা ফাউন্ডেশন শিশু পার্কের পাশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালীন এইচএসসি পরীক্ষার্থী আজিমকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় আব্দুল আলিম ও ইমনকেও রড-ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনার পর তাদের জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে আজিমের মৃত্যু হয়।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার আসিফ রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই আজিমের মৃত্যু হয়েছে৷ তার পিঠে ছুরিকাঘাত রয়েছে এবং এর কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। আহতদের একজনকে কাঁধে ও পিঠে ছুরি ও শক্ত বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় আহত নতুনহাট মন্ডলপাড়া এলাকার আব্দুল হাইয়ের ছেলে আব্দুল আলিম নামোশংকরবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল আলিম জানায়, এশার নামাজের পরে ঘটনাটি ঘটে। পার্ক থেকে যাওয়ার পথে দেখতে পায় দুই গ্রুপের মারামারি চলছে। ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি করছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কে বা কারা আমার ওপর হামলা চালায়। তিনি নিজেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শামসুলের সমর্থক বলে দাবি করে।
নিহতের ফুফাতো ভাই রুবেল বলেন, আমার ফুফু ফোন করে জানান, কে বা কারা আজিমকে ছুরি মেরেছে। হাসপাতালে এসে দেখি সে মারা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান জানান, আজ সকালের ভোটের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। মোবাইলফোন আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় এক যুবকের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন পক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচনে কোন প্রার্থী বা রাজনৈতিক কোনো কারণে ঘটনাটি ঘটেনি। সুষ্ঠ তদন্ত করে ঘটনার প্রকৃত কারন উদঘাটন করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন নৌকা প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমান, মোবাইলফোন প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শামিউল হক লিটন, নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম ও জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক শিবির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল।
এছাড়াও ১৫ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৯৮ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ২১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় এবার ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ৪৩২ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ৭৪ হাজার ৬৫ জন।
তফসিল অনুযায়ী সপ্তম ধাপে পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৯ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১১ অক্টোবর, বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর, আপলি নিষ্পত্তি ১৬ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৭ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ অক্টোবর হয়।
জাহাঙ্গীর আলম/এমএসআর