মাগুরার শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে বিজয়ী ও পরাজিত দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনকে আটক করেছে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে সাবেক সদস্য প্রমথ বিশ্বাস ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফুটবল প্রতীকের জীবন বিশ্বাস। নির্বাচনে জীবন বিশ্বাস ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। অন্যদিকে ৯৯৬ ভোট পেয়ে মাত্র ১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন প্রমথ বিশ্বাস।

পরাজয় মেনে নিতে না পেরে প্রমথ বিশ্বাস গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) পুনরায় ভোট গণনার জন্য মাগুরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ আরও চরমে পৌঁছায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই বিরোধের জেরে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ধনেশ্বরগাতী গ্রামের বটতলা এলাকায় বিজয়ী ইউপি সদস্য জীবন বিশ্বাস তার সমর্থকদের নিয়ে প্রমথ বিশ্বাসের ওপর হামলা চালান। এ সময় প্রমথ বিশ্বাসের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় প্রমথ বিশ্বাস (৫৫), অসীম বিশ্বাস (৪০) বিজন বিশ্বাস (৪৫), রিক্তা বিশ্বাস (৩৫) পলি বিশ্বাস (২৫) বিচিত্র বিশ্বাস (২৭) ও তপু বিশ্বাস (১৮)-সহ উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ এলাকা থেকে ১৩ জনকে আটক করে।

আহতদের মধ্যে যশোর সিটি কলেজের সম্মান প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী পলি বিশ্বাসসহ সাতজনকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের বিষয়ে জীবন বিশ্বাস ও প্রমথ বিশ্বাস পরস্পরকে দায়ী করেছেন। প্রমথ বিশ্বাস বলেন, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই জীবন বিশ্বাসের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। তিনি আরও বলেন, আমার বিশ্বাস পুনরায় ভোট গণনা হলে ফলাফল আমার পক্ষে আসবে।

বিজয়ী মেম্বার জীবন বিশ্বাস বলেন, নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রমথ বিশ্বাস আমার লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা বাধায়। ফলে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

তবে ঘটনা নির্বাচনকেন্দ্রিক নয় জানিয়ে শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারক বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়, জমিজমা নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। সে ঘটনার রেশ ধরেই আজ সংঘর্ষ বাধে। জীবন বিশ্বাস ও তারাপদ বিশ্বাসসহ ১৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে।

একেএম/এনএ