আগামী (২ ডিসেম্বর) এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের এইচএসসি (ব্যবসায় বিভাগ) দ্বিতীয় বর্ষের ৩৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়েও ফরম পূরণ করেননি অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর। অধ্যক্ষের গাফলতির কারণে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দুপুরের দিকে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে রৌমারী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে রৌমারী উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে মিলিত হয়। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করে।

এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী সুমাইয়া ও মিলন বলে, কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর কাছে ফরম পূরণের জন্য তিন হাজার করে টাকা জমা দিয়েছি, কলেজে পরীক্ষা প্রবেশপত্রের জন্য গিয়ে দেখি আমাদের ৩৬ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র নেই। বিষয়টি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে আমরা সবাই অধ্যক্ষের রুমে গেলে তিনি কলেজ থেকে পালিয়ে যান। অধ্যক্ষের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় আমরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করি।

পরীক্ষার্থী হাফিজুর, সেলিম বলে, এইচএসসি প্রথম বর্ষের আমাদের ১৫৬ জন শিক্ষার্থীকে ফেলের কথা কথা বলে ১ হাজার ২০০ করে টাকা নিয়েছে। আমরা পরে জানতে পারি কেউ ফেল করেনি। আমরা ৬০০ শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকা পাইনি। উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নিয়েছেন অধ্যক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের অনেক প্রভাষক বলেন, অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর শিক্ষার্থী কাছ থেকে উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে এক হাজার করে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ নেওয়া টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেন। আমাদের কোনো টাকাপয়সা দেন না। আমরা শুধু বেতন পাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রৌমারী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু ২০২০ সালে অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে হাতে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ছাত্র-ছাত্রীরা যে অভিযোগ করছে, সব ভিত্তিহীন। তারপরও সংশোধনীর জন্য ঢাকায় যাচ্ছি। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দেখে। আমাদের করার কিছুই নেই।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, রৌমারী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবদুর রহমান বলেন, গতকাল ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণের সুযোগ ছিল। আমাদের এখন করার কিছুই নেই। কলেজের অধ্যক্ষ টাকা নিয়ে কেন ফরম পূরণ করেননি, তা আমার বোধগম্য নয়। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পেলে পরীক্ষা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

মো. জুয়েল রানা/এনএ