‘মুখ দেহানোর কায়দা রাখলেন না স্যার। এই কামডা কি হরলেন। জামিন পাওয়ার পর কেমনে মানসেরে মুখ দেহামু। এই কামডা কইরেন না, মিডিয়ারে মোগো ছবি দিয়েন না।’

প্রায় ১৫ লাখ টাকার গাঁজাসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আনতে গেলে উচ্চস্বরে এসব কথা বলতে থাকেন অভিযুক্ত দুই মাদক ব্যবসায়ী। এমনকি থানা হাজতে প্রবেশ করানোর সময়েও অভিযুক্ত দুই মাদক ব্যবসায়ীকে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটে।

আটকরা হলেন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পলাশ হাওলাদার ও দীপু হাওলাদার। তাদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম জানান, কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকার বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুসলপুর ২ নম্বর গলিতে দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসা করে আসছিলেন পলাশ হাওলাদার, দীপু হাওলাদার ও তাদের সহযোগীরা। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশ দেখে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করে। তাদের আটক করে তাদের উপস্থিতিতে ঘর তল্লাশি চালালে খাটের ওপরে রাখা তিনটি স্কুলব্যাগে ২৫ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। যার অবৈধ বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।

তিনি আরও জানান, এই চক্রটি বিভিন্ন মাধ্যমে মাদকদ্রব্য এনে বরিশাল ও আশেপাশে ব্যবসা করে। এর আগেও তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু জামিনে বেড়িয়ে তারা আবারো এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

অভিযানে থাকা এক পুলিশ সদস্য বলেন, আটকদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গাঁজা স্কুলব্যাগে করেই ঢাকা থেকে বাসযোগে বরিশালে নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযান যখন পরিচালনা করা হয় তখন ওই ঘরে আরও একজন নারী মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান তিনি। আমরা চেষ্টা করছি আটকদের পুরো গ্যাং শনাক্ত করার। কার কাছ থেকে কীভাবে বরিশালে গাঁজা এলো তা তদন্তে উঠে আসবে বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান বাদী হয়ে আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এদিকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে কোতোয়ালি থানায় সাংবাদিকদের ব্রিফিং শেষে আটক মাদক ব্যবসায়ীদের ছবি ও ভিডিও নিতে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা বলেন, জামিনে বের হয়ে মুখ দেখাতে পারব না। ইজ্জতটা রাখেন স্যার।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর