লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্বামী পরিচয়ে ঘর থেকে চোখ-মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার মূলহোতা লোকমান হোসেন ওরফে কালু পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে জসিমকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূকে কল করা মোবাইলফোন নম্বর ট্র্যাকিং করেই কালুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কালুর জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কালু গৃহবধূর স্বামীর সঙ্গেই মেঘনা নদীতে মাছ শিকারের কাজ করে। কোনো এক সময় বাড়িতে কথা বলার অজুহাতে গৃহবধূর স্বামীর মোবাইল ফোন নেয় কালু। এতে তিনি গোপনে ওই নারীর নম্বর সংগ্রহ করে রাখে। এতে ৩০ নভেম্বর বিকেলে কণ্ঠ নকল করে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালু ওই গৃহবধূকে কল দেয় এবং রাতে বাড়িতে ফিরবেও বলে জানায়। 

ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফের কণ্ঠ নকল করে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালু গৃহবধূকে ঘরের দরজা খুলতে বলে। দরজা খুলে স্বামীকে দেখতে না পেয়ে গৃহবধূ দরজাটি বন্ধ করতে যায়। এতে তাৎক্ষণিক গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে কাপড় ও রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলে তাকে টানা হেঁচড়া করে ঘর থেকে ৩০০ গজ দূরে ধানক্ষেতে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে কালু। এতে ওই গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়েন। পরে মৃতভেবে ধানক্ষেতে তাকে ফেলে রেখেই কালু পালিয়ে যায়।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয়রা উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নে চরলরেঞ্চ গ্রামের ওই ধানক্ষেত থেকে রক্তাক্ত ও অর্ধ-বিবস্ত্র অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে রাতেই কালুকে চরলরেঞ্চের চৌধুরীবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কালু ভোলা জেলার মাইজচর এলাকার মৃত রফিক মাঝির ছেলে। গৃহবধূর পাশের বাড়িতেই কালু ভাড়া ঘর নিয়ে থাকত। সেখান থেকেই তার প্রতি কালুর খারাপ দৃষ্টি জন্মায়।

কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনার মূলহোতা কালুকে গ্রেফতার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস