নিহতদের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুরে একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে কিশোরগঞ্জের একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুতে পরিবারে মাতম চলছে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী বলছেন এমন ঘটনা তারা কখনো দেখেননি। 

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ কাউসার খানের মৃত্যু হয়। সেখানে একই ঘটনায় দগ্ধ কাউসারের স্ত্রী শান্তা খান (২৭) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাউসার খানের দুই শিশু সন্তান ইয়াছিন খান (৫) ও নোহর খানের (৩) মৃত্যু হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা খাঁন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। এলাকাবাসী একের পর এক আসছেন তাদের খোঁজখবর নিতে। এলাকাবাসী বলছেন- এমন ঘটনা তারা কখনো দেখেননি। গতকাল শুক্রবার দুই শিশুর মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আজ তাদের বাবা কাউসার খানের মরদেহ সন্ধ্যায় বাড়িতে আসলেই আবার শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি। 

ছেলে-মেয়ের সঙ্গে নিহত কাউসার খান

এদিকে পারিবারিক কবরস্থানে ছেলে ইয়াছিন খান ও মেয়ে নোহর খানের কবরের পাশে বাবা কাউসার খানের মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নিয়েছে পরিবারের লোকজন। রাতেই কাউসারের জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।

নিহত কাউসার খানের বড় ভাই আব্দুল কাইয়ুম খান ঢাকা পোস্টকে জানান, চাকরির সুবাদে গত ১০ বছর ধরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত কাউসার। কাউসার আবুল খায়ের গ্রুপে রিভার ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করত। 

তিনি বলেন, কীভাবে কী হয়েছে আমরা এখনো সঠিক বিষয়টি জানতে পারিনি। আমাদের পরিবারটি ধ্বংস হয়ে গেল। সরকারের কাছে আমি ক্ষতিপূরণ চাই।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় আমরা শোকাহত। কাউসার খুব ভালো ছেলে ছিল। আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই ঘটনার ক্ষতিপূরণ চাই। যাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা জীবন চালাতে পারে।

প্রসঙ্গত, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির  দোতলায় ভাড়া থাকতেন কাউসার খান। গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কাউসারের ফ্ল্যাটে বিকট শব্দ হয়। এ শব্দে আশপাশের মানুষ ভয়ে আঁতকে ওঠেন। ঘরের জানালা ভেঙে যায়। কাউসারের ঘরের সবাই চিৎকার করছিলেন। পরে লোকজন বের হয়ে দেখতে পান, কাউসারের ফ্ল্যাটে আগুন জ্বলছে। তখন ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। তবে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসার আগেই প্রতিবেশীরা পানি দিয়ে আগুন নেভান। চারজনকে দগ্ধ অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়। 

এসকে রাসেল/আরএআর/জেএস