প্লাস্টিক পোড়ানোর ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
নতুনপাড়া-বাঁধন পাড়া লিঙ্ক রোডের ভাঙারি ব্যবসা
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসিক এলাকা নতুনপাড়া-বাঁধন পাড়া লিঙ্ক রোডের ভাঙারি ব্যবসায়ীরা আগুনে প্লাস্টিক পোড়ানোর ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। আগুনে পোড়া প্লাস্টিকের বিষাক্ত ধোঁয়ায় শিশু ও বয়স্করা মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মাদকসেবীরা রাতে এখানে আড্ডা দেয়। তাদের আশ্রয় দেন এই ভাঙারি ব্যবসায়ীরা। এতে এলাকার স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙারি ব্যবসায়ীদের এই এলাকা থেকে স্থানান্তর করার দাবি জানাই।
সাদিকুর রহমান রুবেল, সাংস্কৃতিকর্মী
বিজ্ঞাপন
সরেজমিন দেখা যায়, উত্তর নতুন পাড়ায় দুটি ভাঙারি ব্যবসায়ীদের ঘর রয়েছে। চারপাশে উঁচু অট্টালিকা হলেও এই ঘরগুলো পুরোনো টিনের। ভাঙারি মালামাল সংগ্রহের এই ঘরগুলো নিজেই ভাঙাচোরা হয়ে আছে। এ দুটি ঘরে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি ভ্যানগাড়ি করে প্লাস্টিকের বোতল, বাচ্চাদের খেলনা ও পুরোনো টিন এনে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, এই ভাঙারি সংগ্রহ করার ঘরগুলো ১৫ বছর ধরে রয়েছে। শুরু থেকে যারা এই এলাকায় ছিলেন, তারা অনেকেই চলে গেছেন। কিন্তু এখনো দুটি ঘর রয়ে গেছে। এই ভাঙারি সংগ্রহ করা ব্যক্তিরা জেলার বিভিন্ন পাড়া-গ্রাম থেকে পুরোনো প্লাস্টিকের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন। বাছাই করা প্লাস্টিক ঢাকার ভৈরবে পাঠান তারা। যেগুলো পাঠানো সম্ভব নয়, সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এতে বায়ুদূষণে নগরজীবন ব্যাহত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সাংস্কৃতিকর্মী সাদিকুর রহমান রুবেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাঙারি ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিক আগুনে পোড়ানোর কারণে এলাকার শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরাসহ সবার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাদের এই বিষয়ে অভিযোগ করলে সিংহভাগ ভাঙারি ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু এখনো কয়েকজন রয়ে গেছেন।
নতুনপাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এই ভাঙারি ব্যবসায়ীদের বারণ করেছি প্লাস্টিক আগুনে না পোড়ানোর জন্য। তারা এখন দিনে প্লাস্টিক পোড়ান না। সন্ধ্যা হলেই অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে আগুনের বিষাক্ত ধোঁয়ার জন্য বাসায় থাকা যায় না।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে মাঝরাতে পোড়া গন্ধে ঘুম ভেঙে যায়। বাসার সবাই ভাবলাম আগুন লেগেছে। পরে দেখি তারা প্লাস্টিক জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন।
আমরা আর প্লাস্টিকে আগুন দেব না। বিষয়টির জন্য আমরা লজ্জিত। ভবিষতে প্লাস্টিকে আগুন দিলে এলাকাবাসী যা শাস্তি দেবেন, তা-ই মেনে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এই ব্যবসায়ী।
সাইদুল মিয়া, ভাঙারি ব্যবসায়ী
ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. অরুণ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কোনো মাদকসেবীকে আশ্রয় দিই না। যারা এই বিষয়টি অভিযোগ করেছেন, সেটি সঠিক নয়। তিনি বলেন, আগুনে প্লাস্টিক পোড়ালে এলাকার পরিবেশের ক্ষতি হয়। আবাসিক এলাকায় এত দিন প্লাস্টিক পুড়িয়ে ভুল করেছি আমরা। আর পোড়াব না।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম সাবেরীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমিও তাদের বলেছি এ রকম আগুনে প্লাস্টিক পোড়ালে এই এলাকা ছাড়তে হবে। তারা বলেছে, প্লাস্টিক এ রকম আগুনে আর পোড়াবে না।
সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ