ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারজুড়ে যানজট রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন চলাচলকারী যাত্রীসহ চালকরা। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে গত রোববার সকাল থেকে গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে গুঁড়ি বৃষ্টি ও রাতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়।

আর এতেই তলিয়ে যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর বিভিন্ন অংশ। গাজীপুর মহানগরীর বড়বাড়ি, কলেজ গেট, স্টেশন রোড, গাজীপুরা, ভোগড়া, গাজীপুর বাইপাস, টঙ্গী বাজার, বোর্ড বাজার, পূবাইল-মীরেরবাজার বাইপাসহ আশাপাশের সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে।

ওই সড়কে বিআরটি প্রকল্পে কাজ চলমান থাকায় মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। এখনো পানি জমে থাকায় ধীরে ধীরে খানাখন্দগুলো বড় হয়ে মহাসড়কে চলাচলকারী বাস-ট্রাক আটকে যাচ্ছে। এতে দুর্ভোগের মাত্রা চরম আকার ধারণ করছে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও মহাসড়কে খানাখন্দ থাকায় তাদের সে চেষ্টা কোনো কাজেই আসছে না।

প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহনের সুপারভাইজার মোজাম্মেল হক বলেন, গাজীপুরের জৈনাবাজার এলাকা ভোর ৫টা ২০মিনিটে প্রতিদিনই বাস ঢাকা উদ্দেশে ছেড়ে যায়। স্বাভাবিক সময়ে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে গুলিস্তানে গিয়ে পৌঁছে বাসটি। বুধবার ভোরের বাসটি সকালে গুলিস্তান পৌঁছার কথা থাকলেও সেটি বেলা সাড়ে ১১টায় গিয়ে পৌঁছায়। চারদিন ধরে স্বাভাবিক সময়ের চাইতে কয়েকগুন সময় বেশি লাগছে।

মহাসড়কের ঢাকা ও ময়মনসিংহগামী দুপাশেই বড় বড় গর্তের তৈরি হয়েছে। এতে ধীরগতি নিয়ে ওই এলাকা পার হচ্ছে যানবাহনগুলো। এতে যান চলাচলে স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়ায় দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে।

প্রতিদিনই খিলক্ষেত থেকে গাজীপুরের একটি ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করেন আজাহারুল ইসলাম। তিনি জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। কয়েকবছর ধরে এই অবস্থা চললেও দুর্ভোগ লাঘবে তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক বুলবুল বলেন, আমাদের ট্রিপপ্রতি বেতন দেওয়া হয়। আগে দিনে দুই থেকে তিনটি ঢাকা-আপডাউন করতে পারতাম। এখন যানজটে কারণে একটাই কষ্ট হয়ে যায়। এতে আমাদের আয় কমে গেলেও কষ্ট বেড়েছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ ও ভারী বৃষ্টির কারণে যানচলাচলে ধীরগতি রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে রয়েছে। আমরা সড়কের পাশের ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছি।

বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক মহিউল আলম বলেন, অসময়ে হঠাৎ বৃষ্টিতে নির্মানাধীণ সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। যার কারণেই মূলত যানজট। খানাখন্দ সংস্কারের জন্য আমাদের একাধিক টিম মহাসড়কে কাজ করছে। আবার কিছু স্থানে নির্মাণাধীণ লেনে কাজ চলমান থাকায় এক লেনেই গাড়ি চলতে গিয়েও যানজটের তৈরি হয়।

শিহাব খান/এমএসআর