জয়পুরহাটে ফারুক হোসেন (২২) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে পাঁচবিবি পৌর পার্কের গেটের সামনে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই ফারুকের মৃত্যু। এ ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ফারুক হোসেন পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি  পাঁচবিবি পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। 

আটকরা হলেন- পাঁচবিবি মহিপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধুরইল গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মো. মাহমুদুল হাসান (৩০), উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাম্বুবান গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (২৮), একই গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে মো. আনিসুর রহমান (৫০) এবং ধুরইল গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে মো. মুজাহিদুল ইসলাম (২৮)।

পাঁচবিবি থানা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম ডালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে অনেকেই চলে যান। এরপর আমরা কয়েকজন নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে এসে দেখি পৌর পার্কের সামনে রাখা আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে। যারা আগুন দিয়েছে তাদেরকে আমাদের নেতাকর্মীরা চিনে ফেলে। এ ঘটনায় রাত ১২টার দিকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য আমরা সেখানে অবস্থান করছিলাম।

এ সময় হঠাৎ কয়েকজন এসে ছাত্রদল নেতা ফারুককে মেরে আহত করে। ফারুক দৌড়ে পালাতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। তখন আহত অবস্থায় ফারুককে উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ফারুকের মামা আমজাদ শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাগিনা ছাত্রদলের সঙ্গে  জড়িত ছিল। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল না। কিন্তু কেন আমার ভাগিনা ফারুককে হত্যা করা হলো। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তরিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মারধরের ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ যাচাই করে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আরও যারা জড়িত আছে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতির চলছে।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মিটিং করছিল। পরে তাদের গাড়িতে আগুন দেওয়া নিয়ে রাতে থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন ছেলে সেখানে ঘুরাফেরা করছিল। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সে সময় ওই ছেলেটি আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে সে মারা যায়। এ ঘটনায় সিসি টিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ ছাত্রলীগের কয়েকজনকে আটক করেছে। সঠিক তদন্তে যারা প্রকৃত দোষী তাদের শাস্তি হোক।

চম্পক কুমার/আরএআর