জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, রাব্বুল আলামিন সবাইকে দিয়ে ভালো কাজ করান না। সবাই ভালো কাজ করতে পারেন না। সবাই কৃষক, শ্রমিকের পক্ষে কাজ করতে পারেন না। কারণ ক্ষমতায় গিয়ে তাদের মধ্যে দাম্ভিকতা আসে, অহংকার আসে, মানুষকে মানুষ মনে হয় না। ক্ষমতায় বসে মনে হয় চারদিকে যা দেখি সবই আমার প্রজা। আর আমি তাদের প্রভুতুল্য। এই দাম্ভিকতা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পছন্দ করেন না। কোন সীমা অতিক্রমকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। সীমা অতিক্রম করার কারণে আজকের প্রতিমন্ত্রী কালকে জিরো।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর এমআর সরকারি কলেজ মাঠে আক্কেলপুর পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, এখন মানুষ ভালো আছে। মানুষ এখন পেট ভরে খাবার খায়, মানুষের পরনে কাপড় আছে, মানুষ এখন তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য ব্যয় করতে পারে, মানুষ এখন খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায়-বিকেলে রাস্তার পাশে, পাড়ার মোড়ে বসে আড্ডা দিতে পারে। সেখানে সংসদ বসে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক থাকে। সবাই দেশ জাতি সমাজ নিয়ে মুক্ত আলোচনা করে। যারা আমাদেরকে খুব পছন্দ করে তারা আমাদেরকে ভালো বলে। আর যারা আমাদেরকে অপছন্দ করে, তারা বিভিন্ন সুযোগ নিয়ে আমাদের সমাজে সমালোচনা করেন। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের পক্ষে-বিপক্ষে মানুষ কথা বলবে, মানুষের চাওয়ার শেষ নেই, মানুষের প্রত্যাশারও শেষ নেই।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দল ১২ বছর ক্ষমতায় আছে। নিজের শরীরের মধ্যে অনেকেই তাপ সহ্য করতে পারে না। অনেকেই নিজেদের বাহাদুর, বিশেষ ব্যক্তি মনে করি। এই রাজনীতিবিদকে মানুষ ঘৃণা করে, মনে মনে গালি দেয়। এখন আমি শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা, গালি নাকি সালাম-দোয়া নেব এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক আমিই। কিন্তু মানুষ কেন বিপদে পড়লে রাজনীতিবিদদের কাছে যায়? কারণ তারা জানে এই মানুষটির কাছে গেলে তিনি আমার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। সুতরাং আপনাদের অনুরোধ আমরা যেন মানুষের সেবা করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে দেই বাচ্চারা সারাদিন বসে থেকে মোবাইলে চ্যাটিং করে। আর বাচ্চার দোষ দিয়ে লাভ কী? বড় বড় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, নেতারাই যখন রাতের বেলা নায়িকার সঙ্গে বসে কথা বলে আর বাচ্চাদের বলে লাভ কী? নষ্ট আমরা সবাই হয়ে গেছি। এই জায়গা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আমাদের আক্কেলপুর-কালাই-ক্ষেতলাল, জয়পুরহাটকে মুক্ত হতে হবে। 

এ যৌথ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোকছেদ আলী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা, আক্কেলপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রানা চৌধুরী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এস এম ফারুক।

সম্মেলনে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এনামুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ডল, প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রুকিন্দীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির এপ্লব। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি, মোকছেদ আলী মাস্টার, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর, আক্কেলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম আকন্দ, আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চম্পক কুমার/আরএআর