মোবাইল ফেরত পেয়ে আনন্দে কেঁদেছি
‘অনেক কষ্ট করে ছয় মাস আগে মেয়ের জন্য একটা বড় মোবাইল (স্মার্টফোন) কিনেছিলাম। স্কুল বন্ধ, অনলাইনে ক্লাস করা লাগে। কেনার কয়েক দিন পরেই মোবাইলটি হারিয়ে যায়। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার মেয়ে তো সারা দিন কাঁদত। কিন্তু আমার পক্ষে তো আর একটা দাম দিয়ে মোবাইল কেনা সম্ভব হয়নি। আজ সেই মোবাইল ফেরত পেয়ে আমি আনন্দে কেঁদেছি। মোবাইল পাওয়ার কথা শুনেই মেয়েও যে কত খুশি হয়েছে বলে বোঝাতে পারব না।’
ছয় মাস আগে হারিয়ে যাওয়া ফোন ফেরত পেয়ে এভাবেই অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন ফকিরহাট এলাকার দিনমজুর জাহিদ শেখ।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রকৃত মালিকদের হাতে এই মুঠোফোন হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক। বাগেরহাটে বিভিন্ন সময় হারিয়ে যাওয়া ২২টি মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হারানো ফোন ফিরে পাওয়ার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে রামপাল উপজেলার সবুজ খান বলেন, মোবাইলের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। বন্ধুর পরামর্শে থানায় জিডি করেছিলাম। চার মাস পরে আজ ফোন ফেরত পেয়েছি। পুলিশের প্রতি আমি সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ।
বিজ্ঞাপন
মোংলা এলাকার জয়নব বিবি বলেন, পাঁচ মাস আগে আমার স্বামীর মুঠোফোন হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে না পেয়ে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলাম। হঠাৎ গতকাল কল দিয়ে জানানো হয়েছে যে আমাদের ফোন পাওয়া গেছে। হারানো মুঠোফোন আজ হাতে পেলাম। পুলিশের এই তৎপরতায় আমরা খুব খুশি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, বিভিন্ন সময়ে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের জিডির সূত্র ধরে আমরা ২২টি মোবাইল উদ্ধার করেছি। এসব মোবাইল প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় মূল্যবান মুঠোফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষদের আরও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, অপরাধ দমন ও মানুষের সেবাদানের ক্ষেত্রে পুলিশের সক্ষমতা অনেক গুণ বেড়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মুঠোফোন উদ্ধারসহ অপরাধীদের শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
এ সময় বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আছাদুজ্জামান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান, মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হাসিব ইকবাল, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল হক, পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক এস এম আশরামুল আলমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোনের জন্য করা সাধারণ ডায়েরি সূত্রে এসব মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও হারানো মুঠোফোন পেয়ে খুশি মালিকরা।
তানজীম আহমেদ/এনএ