জনসম্মুখে একবারের জন্যও মাস্ক খোলেননি মেয়র টিটু
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা বিশ্বের মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন। মাস্ক ব্যবহার না করলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকার আইন প্রয়োগ করে জেল-জরিমানা করছেন। তারপরও সুযোগ পেলেই মানুষ মাস্ক খুলে রাখছেন। আবার অনেকেই দীর্ঘ সময় মাস্ক পরার পর মনের অজান্তেই থুতনিতে নামিয়ে রাখছেন।
এক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রম ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ৬৫০তম দিন আজ (১৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত জনসম্মুখে একবারের জন্যও মাস্ক খোলেননি তিনি, এমনকি থুতনিতেও নামাননি। অথচ করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তিনি প্রতিদিন ঘর থেকে বের হয়েছেন এবং মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশেও যোগ দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
দাফতরিক এবং রাজনৈতিক কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিন মেয়র যাদের সংস্পর্শে থাকেন এমন কয়েকজন জানান, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে মেয়রকে কোনো দিন মাস্ক ছাড়া দেখেননি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে সংক্রমণ কমে এলে ময়মনসিংহে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বেড়েছে।
মেয়র ইকরামুল হক ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় মেয়রের পাশে অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং সাংসদের মতো জনপ্রনিধিকে মাস্ক ছাড়া বসে থাকতে দেখা গেছে। তবে মেয়র করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত একটিবারের জন্যমাস্ক খুলে রাখেননি। এই সময়টায় পরিবারের মানুষ ছাড়া কেউই তার পুরো চেহারা দেখতে পায়নি।
বিজ্ঞাপন
মেয়রের প্রতিদিনের কাজের ছবি ও খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এছাড়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা গণমাধ্যমে কোনো দিন মাস্ক ছাড়া তাকে কেউ দেখেনি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ মহাবুল হোসেন রাজীব বলেন, আমি প্রতিদিনই মেয়র স্যারের সঙ্গে বিভিন্ন সভা সেমিনারে যোগ দেই। সেসব সভায় অনেকেই মাস্ক খুলে রাখেন কিংবা বক্তব্য দেওয়ার সময় মাস্ক খুলে বক্তব্য দেন। তবে আমাদের মেয়রকে কখনই মাস্ক খুলতে বা থুতনিতে নামিয়ে রাখতে দেখিনি। এটা একটা অনন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করি।
মেয়র ইকরামুল হক টিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি মানুষকে মাস্ক পরতে উৎসাহিত করার জন্য আমি কখনই জনসম্মুখে মাস্ক খুলি না। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আমরা মানুষকে মাস্ক ব্যবহারের জন্য বলেছি। মাস্ক ব্যবহার না করার জন্য ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মানুষকে জরিমানা করেছি। এ অবস্থায় আমি নিজে মাস্ক খুলে রেখে মানুষকে যদি মাস্ক ব্যবহারের কথা বলি সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
মেয়র টিটু আরও বলেন, প্রতিদিন সকালে বের হওয়ার সময় আমি দুটি মাস্ক পরি। বাসায় গিয়ে তারপর সেই মাস্ক খুলি। এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, শুরুর দিকে করোনার টিকা নিয়ে মানুষের মনে যখন কিছুটা ভয় ছিল তখন ময়মনসিংহের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মেয়র ইকরামুল হক টিটু সবার আগে করোনার টিকা নেন।
উবায়দুল হক/এসপি