টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভা‌বিপ্রবি) আলেমা খাতুন ভাসানী হলের বিবাহিতদের আবাসিক ছাত্রীদের হলের সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই নি‌র্দেশ অমান‌্যকারী‌দের বিরু‌দ্ধে বিশ্ব‌বিদ‌্যালয় কর্তৃপক্ষ ব‌্যবস্থা নেওয়ার কথাও নো‌টি‌শে উল্লেখ ক‌রে‌ছে। 

হ‌লে এমন নো‌টিশ জা‌রি হ‌ওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ত‌বে শিক্ষার্থীরা এমন নিয়ম প্রত্যাহারের দাবি জা‌নি‌য়ে‌ছেন।

অন্যদিকে হ‌লের দা‌য়িত্বে থাকা প্রভোস্ট নিয়ম-নীতির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই জা‌নি‌য়ে ব‌লেন, অনেক বিবা‌হিত শিক্ষার্থী হ‌লে না থে‌কে বাইরে থা‌কেন অথবা তা‌দের আত্মীয়‌দের সেখা‌নে রা‌খেন। হল ছাড়‌লে এতে অন‌্যান‌্য অবিবা‌হিত মেয়েরা হ‌লে থাকার সু‌যোগ পা‌বে।

জানা যায়, মাভা‌বিপ্রবির আলেমা খাতুন ভাসানী ছাত্রী নিবাসে সিট রয়েছে ২৪৮টি। করোনার পরবর্তী সময়ে সিটের জন্য অধিক শিক্ষার্থী আবেদন করায় বিবাহিতদের হল ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত ১১ ডি‌সেম্বর আলেমা খাতুন ভাসানী হ‌লের প্রভোস্ট রোকসানা হক রিমি স্বাক্ষরিত হলের বোর্ডে টাঙানো নো‌টি‌শে জানা‌নো হয়, ‘হলের নিয়ম অনুযায়ী বিবাহিতা ছাত্রীদের হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বিবাহিত ছাত্রীদের সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হলো।’ কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে হল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। না জানালে নিয়ম ভঙ্গের কারণে জরিমানাসহ সিট বাতিল করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের শিক্ষার্থীরা জানান, কর্তৃপক্ষের এই নোটিশে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিবাহিত-অবিবাহিত সবারই হলে থাকার অধিকার রয়েছে। এ ধরনের আইন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। এ মুহূর্তে হলে অনেক বিবাহিত শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে জানান তারা।

শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, অনেক মেয়েই আছে, যা‌দের পড়াশোনা চলাকালেই বিয়ে হয়। তাদের বিয়ে হলেও হলে থেকেই নিয়মিত লেখাপড়া চালিয়ে যান। এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ায় বিবাহিত মেয়েদের লেখাপড়ায় সমস্যা হবে। হলে নিরাপদে কম খরচে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বাইরে থাকতে খরচ যেমন বেশি, নিরাপত্তাটাও অনেক কম। তাই বিবাহিত মেয়েদের হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ দিয়েছে, তা আর একবার ভেবে দেখা প্রয়োজন।

মাভা‌বিপ্রবির আলেমা খাতুন ভাসানী হলের প্রভোস্ট রোকসানা হক রিমি বলেন, হলে সিটের জন্য এবার অনেক বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। তখন দেখা গেছে হলে অনেক বিবাহিত শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা সিট বরাদ্দ নিয়ে হলে নিয়মিত থাকে না। সিটটি ফাঁকা পড়ে থাকে। আবার কেউ সিটে অতিথিদের উঠিয়ে দিয়ে রেখেছে। তাই তাদের সিট বরাদ্দ বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তি‌নি আরও ব‌লেন, ২০০৫ সালে থেকেই এই নিয়ম চালু রয়েছে। ছাত্রীদের অঙ্গীকারনামায়ও বিবাহিত ছাত্রীরা হলে থাকতে পারবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে সিটের তুলনায় অনেক শিক্ষার্থী সিটের জন্য আবেদন করায় বিবাহিতদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভি‌জিৎ ঘোষ/এনএ