একরামুল হক, মোতালেব হোসেন ও শহিদুল হক

রংপুরের বদরগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে লড়ছেন একই পরিবারের তিনজন। তারা সম্পর্কে আপন ভাই হলেও ভোটযুদ্ধে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। বরং নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে করছেন পাল্টাপাল্টি বিষোদগার।

উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে তিন ভাই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে শহিদুল হক আনারস প্রতীকে, মোতালেব হোসেন ঘোড়া প্রতীকে এবং একরামুল হক মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

ভোটাররা বলছেন, পারিবারিক বিরোধের জেরে এবারই প্রথম একই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে তিন ভাই প্রার্থী হয়েছেন। শহিদুল হক ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। বড় ভাই একরামুল হক নব্বই দশকে চেয়ারম্যান ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থী থাকলেও ভোটারদের আড্ডার আলোচনায় রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আপন তিন ভাই। তারা একই পরিবারের হলেও ভোটযুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলেছেন না। এতে তাদের নিয়ে চলছে সমালোচনাও। 

বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল হক ২০০৩ সাল থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে কালুপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বড় ভাই একরামুল হক ১৯৯১-৯৫ সালে চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে দুই ভাইয়ের সঙ্গে মেজো ভাই মোতালেব হোসেনও প্রার্থী হয়েছেন। গত মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছেন তিনি। অসুস্থ শরীর নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাচ্ছেন।

ওই ইউনিয়নের ভোটার কৃষক বাবু মিয়া বলেন, তাদের তিন ভাইকে নিয়ে আমরা চিন্তিত। তারা যেভাবে একে অপরের সমালোচনা করে ভোট চাইছেন, এতে গ্রামের মানুষ হাটে বাজারে, চায়ের দোকানে বসে হাসাহাসি করছেন। 

তবে ভোটারদের এসব অভিযোগ নিয়ে চিন্তিত নন বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল হক। তিনি জানান, তার বড় দুই ভাই ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হয়েছেন। ভোটাররা এলাকার উন্নয়ন দেখে ভোট দেবেন। 

সাবেক চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, শহিদুল হক আমার ছোট ভাই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকে সে এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভোটারদের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতি এলাকার মানুষের আস্থা রয়েছে। 

অন্যদিকে মেজো ভাই মোতালেব হোসেন বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরা সম্পর্কে ভাই হলেও অতীত দেখেই ভোটাররা পক্ষ নেবেন। আমার ছোট ভাই শহিদুল চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়নে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করেনি। ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ভোটাররা তার প্রতি বিমুখ। 

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদসহ বদরগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে গঙ্গাচড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর