রাজশাহীর চারঘাটে মাদক কারবারিদের দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বে মাইনুল ইসলাম সিলন (৩২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। রোববার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিজ এলাকায় প্রতিপক্ষের চাপাতির কোপে মারাত্মকভাবে আহত হন মাইনুল ইসলাম। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মাইনুল ইসলাম সিলন উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের ঝিকরা এলাকার রিয়াজ আলীর ছেলে। দুই ছেলে ও মেয়ের জনক সিলন আগে কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। মাস দুয়েক আগে মাদক ব্যবসায়ী ভাইয়ের গ্রুপে যুক্ত হন। এই ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ। এরা প্রতিপক্ষ সম্রাট গ্রুপের লোকজন।

সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, বিকেলে সিলন বাড়ি থেকে চারঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে প্রতিপক্ষ সম্রাট গ্রুপের লোকজন তাকে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।

ইউপি সদস্য আরও বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন নিহত সিলনের ছোট ভাই ইব্রাহিম রতন। একই গ্রুপের হয়ে মাদক ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা সম্রাট। মাস দুয়েক আগে রতনের গ্রুপ ছেড়ে আলাদা হয়ে যান সম্রাট। শক্তি বাড়াতে মেজ ভাই সিলনকে মাদক ব্যবসায় ভেড়ান রতন। আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘাত লেগেই ছিল। সপ্তাহ দুয়েক আগে সম্রাট গ্রুপের লোকজন রতনকে কুপিয়ে জখম করে। তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরও করা হয়।

এরপর রতনের লোকজন পাল্টা হামলা চালায় সম্রাটের বাড়িতে। ভাঙচুর করে সম্রাটেরও বাড়িঘর। ওই মামলায় আহত হন সম্রাটের বোন। প্রতিশোধ নিতে রতনের ভাই সিলনের ওপর এই হামলা করে।

ইউপি সদস্য শফিকুল অভিযোগ করে বলেন, রতন ও সম্রাট পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। তাদের নামে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। তবুও পুলিশ তাদের ধরছে না। উল্টো পুলিশের ছত্র-ছায়ায় তারা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, মাদক নয়, পারিবারিক বিরোধের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড। তিনি বলেন, এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ এ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি