কুড়িগ্রাম জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে এক নারী সেবাগ্রহীতার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে কু‌ড়িগ্রাম আঞ্চ‌লিক অফি‌সে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী নারী অ‌ভি‌যোগ ক‌রে জানান, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি একটি পাসপোর্টের আবেদন করেন। তার স্বামী বিদেশ থাকায় তিনি নিজেই এ আ‌বেদন ক‌রেন। কিন্তু আ‌বেদ‌নে সমস্যা আ‌ছে জা‌নি‌য়ে পাস‌পোর্ট কর্মকর্তা মোত্তা‌লেব সরকার তা‌কে ফোন দি‌য়ে অ‌ফি‌সে আস‌তে ব‌লেন। 

ওই নারী আরও জানান, মঙ্গলবার তি‌নি পাস‌পোর্ট অ‌ফি‌সে এ‌সে মোত্তা‌লেব সরকা‌রের সঙ্গে দেখা করেন। মোত্তা‌লেব সরকার তা‌কে তৃতীয় তলার এক‌টি ক‌ক্ষে যে‌তে ব‌লেন। ওই ক‌ক্ষে তার আ‌বেদনপত্র সং‌শোধন কর‌তে হ‌বে বলে জানান। প‌রে তিনি তৃতীয় তলার ক‌ক্ষে গে‌লে মোত্তা‌লেব সরকার রু‌মে ঢু‌কে ভেতর থে‌কে দরজা লা‌গি‌য়ে দেন এবং তা‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে শ্লীলতাহানি ক‌রেন।

এ সময় তার চিৎকা‌রে অ‌ফি‌সে উপ‌স্থিত অন্যান্য লোকজন ধাক্কা দিয়ে দরজা খু‌লে তাকে উদ্ধার ক‌রে। ঘটনাস্থ‌লে উপ‌স্থিত এক ব্যক্তি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দি‌য়ে পু‌লি‌শের সহায়তা চান। প‌রে কু‌ড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার ক‌রে থানায় নিয়ে যান। তবে অ‌ভিযুক্ত মোত্তালেব সরকারকে আটক ক‌রে‌নি পু‌লিশ।

এ ঘটনা পূর্ব প‌রিক‌ল্পিত ও সাজা‌নো বলে দা‌বি ক‌রে‌ছেন অ‌ভিযুক্ত উপসহকারী পরিচালক। তি‌নি ব‌লেন, ওই নারীর স্বভাবই এমন। তিনি ডি‌ভো‌র্সি। ওই নারীর স্বভাব এমন আপ‌নি কীভা‌বে জানলেন, এমন প্রশ্নের জবা‌বে ওই কর্মকর্তা ভুক্ত‌ভোগী নারী‌কে দায়ী ক‌রে ব‌লেন, স্বভাব এমন না হ‌লে এটা‌ কর‌লে কীভা‌বে?

ওই নারী‌কে ফোন দি‌য়ে ডাকার কথা স্বীকার ক‌রে তিনি ব‌লেন, অ‌ফিস থে‌কে ফোন দি‌য়ে তার সনদ জমা ও স্বাক্ষর দি‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে। উ‌নি আজ এ‌সে সেগু‌লো দি‌য়ে আবার ফি‌রে এ‌সে ২৫ তা‌রি‌খের ম‌ধ্যে পাস‌পোর্ট দেওয়ার দা‌বি ক‌রেন। প‌রে তি‌নি এই সিনক্রিয়েট ক‌রেন।

ওই নারী‌কে কেন তিনতলায় পা‌ঠি‌য়ে আপ‌নি ক‌ক্ষে প্রবেশ কর‌লেন, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা ব‌লেন, আ‌মি ওই ক‌ক্ষে যাই‌নি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর থানায় গি‌য়ে দেখা যায়, ওই নারী‌কে এক‌টি ক‌ক্ষে নি‌য়ে জিজ্ঞাসাবাদ কর‌ছে পু‌লিশ। থানায় উপ‌স্থিত ভুক্ত‌ভোগী ওই নারীর কা‌ছে অ‌ভি‌যো‌গ করার বিষ‌য়ে জান‌তে চাই‌লে তি‌নি ব‌লেন, আ‌মি খুব মান‌সিক চা‌পে আ‌ছি। লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ কর‌বে কি না তা ভে‌বে পাচ্ছি না। ত‌বে আ‌মি যা ব‌লে‌ছি তা সব সত্য।

জান‌তে চাই‌লে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) খান মোহাম্মদ শাহ‌রিয়ার ব‌লেন, আমরা ওই নারীর অ‌ভি‌যো‌গের বিষয়‌টি খ‌তি‌য়ে দেখ‌ছি। তি‌নি লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ কর‌লে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নে‌বে। ত‌বে এ ঘটনায় কোনো ভিন্ন উ‌দ্দেশ্য আ‌ছে কিনা আমরা তা খ‌তি‌য়ে দেখ‌ছি। কারণ ওই নারীর সঙ্গে পাস‌পোর্ট অ‌ফি‌সের ক‌য়েকজন দালা‌লের যোগসাজ‌সের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যা‌চ্ছে।

জুয়েল রানা/এসপি