মাদারীপুরে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। নিষেধাজ্ঞায় আট মাস জাটকা আহরণ, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ করা নিষিদ্ধ হলেও জেলার প্রায় সব মাছের আড়ত এবং বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। মৎস্য বিভাগের নিয়মিত অভিযান না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে দাবি সচেতন মহলের।

মাদারীপুর জেলার মাছের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজারটি রয়েছে কালকিনি উপজেলার মিয়ার হাটি এলাকায়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিন এ হাটে শতশত জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ভোর না হতেই শুরু হয় বেচাকেনা। দূর দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে আড়তদারদের থেকে জাটকা ইলিশ কিনে স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা নদী থেকে প্রতিনিয়ত জেলেরা জাটকা ধরে আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। তাছাড়া চাঁদপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল, বরগুনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রলার, নসিমন, মিনিট্রাকে করে প্রতিনিয়ত ইলিশের পাশাপাশি জাটকা নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।

শহরের পুরান বাজার, ইটেরপুল, চরমুগরিয়া, মস্তফাপুর, মিয়ারহাটসহ টেকেরহাট, কবিরাজপুর, কদমবাড়ি, শ্রীনদী, শিবচর, পাচ্চর, উৎরাইল, কাওড়াকান্দি, চান্দেরচর, নিলখী, ভূরঘাটা, গোপালপুর, ঝুরগাঁও, খাশেরহাট, সাহেবরামপুর, ডাসার, শশীকরসহ জেলার ছোট-বড় হাট-বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য বিভাগ বা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

জাফর তালুকদার নামে একজন জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে জাটকা শিকার করে স্থানীয় আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রশাসন কিছু কিছু অভিযান চালালেও এবার এখনো কোনো অভিযান চোখে পড়েনি। দ্রুত জাটকা নিধন বন্ধের দাবি জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, এবার এখনো অভিযান শুরু হয়নি। মাছ শিকার ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই আমাদের জাটকা শিকার করতে হয়।

কালকিনি মিয়ার হাটের আড়তদার জুলহাস বলেন, অন্যান্য মাছ ব্যাবসায়ীরাও জাটকা বিক্রি করেছেন। প্রশাসন যদি জাটকা ধরা বন্ধ করে দিতে পারে তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে।

মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কান্তি ওঝা মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমি এই মুহূর্তে প্রস্তুত নই। কিছুক্ষণ পর ফোন দিলে আমি বিষয়টি বলতে পারব। পরবর্তীতে তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড, রহিমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাদারীপুরে কোথায় কোথায় জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। যে বা যারা জাটকা বিক্রি করছেন তাদের তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। জাটকা ইলিশ বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই আট মাস জাটকা আহরণ, ক্রয়, বিক্রয়, মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাধা নেই।

নাজমুল মোড়ল/এসপি