এমভি অভিযান-১০ ট্র্যাজেডিতে এখনো যাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি তেমন ৩৬টি পরিবার ট্রলার নিয়ে লাশের সন্ধানে বেরিয়েছেন। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঝালকাঠি মিনিপার্ক থেকে তারা সুগন্ধা নদীতে লাশের সন্ধানে যান বলে জানিয়েছেন বরগুনা সদর উপজেলার পরীরখাল এলাকার বাসিন্দা এমএ জলিল। 

তিনি বলেন, গতকাল সারাদিন আমরা ঝালকাঠিতে এসে নদী আর লঞ্চে পোড়াদের মধ্যে আমার স্বজনদের খুঁজেছি। কিন্তু পাইনি। এখন ট্রলার নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছি। যদি কোথাও লাশ ভেসে ওঠে সেই আশায়। গতকাল নদীতে কোস্টগার্ডকে টহল দিতে দেখেছি। আজ সকাল থেকে আর দেখছি না।

আরেক স্বজনহারা আব্দুস ছত্তার বলেন, স্বজন গেছে, তাদের লাশের ব্যবস্থা তো করতে হবে। রাতে ৩৫-৩৬টি পরিবার ঝালকাঠি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ছিলাম। সেখানে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতারা খাবার আর কম্বল দিয়েছে। কিন্তু ভাই, আমার স্বজন তো পাইনি। এখন আমরা সবাই নদীতে নেমেছি সন্ধানে। সারাদিন খোঁজ চালানো হবে বলে জানান তিনি।

মোতালেব হোসেন বলেন, আমার ভাই, ভাবি, ভাইপো পুড়ে মারা গেছে, নাকি পানিতে ডুবে মারা গেছে জানি না। অন্তত লাশটা নিতে চাই বাড়িতে। এজন্য যত দিন লাগে এই নদীর পাড়ে অপেক্ষা করব।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম পারভেজ বলেন, রাতে স্বজনহারাদের ঝালকাঠি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সকালে উঠেই তারা সুগন্ধা নদীর তীরে মিনিপার্কে জড়ো হন। সেখান থেকে ট্রলার নিয়ে নদীতে সন্ধানে গেছেন বলে জেনেছি।

পারভেজ বলেন, ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। যেসব স্বজন রয়েছেন তাদের শান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা নেই। তবে আমরা যতটুকু সম্ভব সহায়তা করে যাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৭ জনের মরদেহ বরগুনায় পাঠানো হয়েছে। তবে শনাক্ত না হওয়ায় স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা এখনই সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৭ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি