বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হাফেজ তুহিন। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে অভিযান-১০ লঞ্চে ফিরছিলেন গ্রামে। লঞ্চে যখন আগুন লাগে তখন প্রাণ বাঁচাতে আড়াই বছরের শিশুসন্তান তাবাসসুমকে নিয়ে স্ত্রীর হাত ধরে ঝাঁপ দেন নদীতে। কিন্তু তীরে এসে দেখেন সন্তান কোলে নেই। কখন যে হাত ফসকে নদীতে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে মেয়ে তা টের পাননি বাবা।

তুহিন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সন্তানের খোঁজে কখনও হাসপাতাল কখনোবা নদীতীরে ছুটে যাচ্ছেন তুহিন ও তার স্ত্রী। কথা বলার শক্তি নেই তাদের।

শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত শিশু তাবাসসুমকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে অবশেষে বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে এসে তাবাসসুমের খোঁজ নেন স্বজনরা। সেখানে এসে জানতে পারেন, শনাক্ত না হওয়া লাশগুলো বরগুনার সার্কিট হাউস মাঠে জানাজা দিয়ে সদরের পোটকাখালীতে দাফনের জন্য নেওয়া হয়েছে। সেখানে দৌড়ে গিয়ে স্বজনরা কফিন থেকে শনাক্ত করে শিশু তাবাসসুমের মরদেহ। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।

লাশ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানার পরে তাবাসসুমের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন এবং দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, শিশু তাবাসসুমের মরদেহ শনাক্ত করতে পেরেছে পরিবার। তাই সরকারিভাবে দাফন না করে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এসপি