পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। 

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে এ  ঘটনা ঘটে। এছাড়াও একই ইউনিয়নের নাজিরপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বতস্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে মারধর করে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক নৌকায় সিল মারার অভিযোগ উঠেছে। 

চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সেলিম মিয়া বলেন, সকালে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সারাদিন সুষ্ঠু ভোট হলেও বিকেলে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এ সময় গুলি ছুড়ে ও ককটেল নিক্ষেপ করে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন তারা। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট চাই। 

হেমায়েতপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, ওই কেন্দ্রে সকাল থেকেই বহিরাগত নৌকার লোকজন হামলা করার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের কড়াকড়িতে কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা নস্যাৎ হওয়ায় দিশেহারা হয়ে কেন্দ্রে হামলা করে গুলি ছুড়েছে তারা। জনসমর্থন হারিয়ে নৌকার প্রার্থী কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নৌকার পক্ষে ভোট কেটে নিয়েছে। অনেক জায়গায় আমার সমর্থকদের মারধর করেছে।

তবে নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মধু বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী নিশ্চিত পরাজয় জেনে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। গোলাগুলির কোনো ঘটনা আমার সমর্থকরা করেননি। বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকেরাই অস্তিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী (মোটরসাইকেল প্রতীক) আলহাজ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়ে তারা নৌকার পক্ষে ভোট কেটে নিয়েছে। আমার এজেন্টদের কেন্দ্রে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে নৌকার লোকজন।

চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের ইনচার্জ (এসআই) তরিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করা হলে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ২৪ রাউন্ড গুলি ৪ টি রাবার বুলেট ও ২০টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। 

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখানে অতিরিক্ত পুলিশ-বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর আমাদের কাছে নেই। ভোটগ্রহণ স্বাভাবিক করা হয়েছে। ভোট দেওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের প্রায় শেষের দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে আনসার ও পুলিশ সদস্যরা বাধা দিয়েছেন। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর