খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের সাত ভাইয়াপাড়া এলাকার মেয়ে আনাই মগিনী। গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে এক গোল করে বাংলাদেশের বিজয় এনে দেন তিনি। বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর সেই ফুটবলকন্যার বাড়িতে গেছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। 

এ সময় তিনি আনাই মগিনীর পরিবারের সুখ-দুঃখের গল্প শোনেন। তাদের নানা সমস্যার কথা জানতে চান। তাদের সুপেয় পানির জন্য একটি নলকূপ ও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বাড়িতে পিলার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় যমজ বোন আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনীর জন্য পোস্ট অফিসে ৪ লাখ টাকার এফডিআর সঞ্চয়পত্র করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তাদের বাড়িতে যাওয়ার যে বাঁশের সাঁকো রয়েছে তার পরিবর্তে একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলবেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।  

জেলা প্রশাসক বলেন, এই খেলোয়াড় দুই বোন আমাদের জেলার গর্ব। তাদের নিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে। সকল সংগঠন ও বিত্তবানদের এদের প্রতি আলাদা নজর রাখা দরকার। তাহলে এরাই আমাদের জেলার মান বৃদ্ধি করতে পারবে বিশ্ববাসীর কাছে।

তিনি আরও বলেন, আমি তাদের জন্য যে অর্থ এফডিআর সঞ্চয়পত্র করে দিচ্ছি তা থেকে যে লভ্যাংশ পাবে তা দিয়ে কিছুটা হলেও পরিবারের সচ্ছলতা আসবে। অন্য কোথাও থেকে যদি এমন সহযোগিতা পায় তাহলে তাদের অভাবের মধ্যে দিন কাটাতে হবে না।

এ সময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কংকন চাকমা, খাগড়াছড়ি ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ধুমকেতু চাকমা, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাশরী মারমাসহ মারমা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

জেলা প্রশাসকের বাড়ি পরিদর্শন নিয়ে ফুটবলকন্যা আনুচিং মগিনী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দুই বোন এক সঙ্গে বাংলাদেশ দলে খেলি। আমরা চেষ্টা করি এই জেলার মান ধরে রাখতে। যাতে আমাদের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ এই জেলাকে মনে রাখে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গরিব পরিবারের সন্তান হওয়ায় বাবা-মা আমাদের সবকিছুতে সাপোর্ট করতে পারে না। আমরাও অর্থিক সংকটের কারণে অন্যদের মতো সব কাজ করতে পারি না। এখন জেলা প্রশাসক আমাদের জন্য যে সঞ্চয়পত্র করে দিচ্ছে তা দিয়ে আমাদের অনেক উপকার হবে। এটির লভ্যাংশের টাকা দিয়ে প্রতি মাসে আমাদের অনেক কিছু করা সম্ভব হবে। আমরা উনার প্রতি কৃতজ্ঞ। উনি এতো কষ্ট করে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে আমাদের বাড়িতে আসবেন আমাদের কল্পনাও ছিল না।

জাফর সবুজ/আরএআর