হবিগঞ্জে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এসপি, ওসিসহ ৫৪ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম।

বিচারক মামলার আদেশ আগামী সোমবার দেবেন বলে জানানো হয়েছে। বিএনপির পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট  মো. আফজল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী, ডিবির ওসি আল-আমিন, ওসি (তদন্দ) দৌস মোহাম্মদ, এসআই (নিরস্ত্র) নাজমুল হাসান, এএসআই আবু জাবের, এএসআই বাপ্পী রুদ্র পাল ও এএসআই আলমগীর হোসেনসহ ৫৪ জন পুলিশ সদস্য। 

মামলায় অভিযোগ আনা হয়- বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি গত ২২ ডিসেম্বর একটি সমাবেশ আহ্বান করে। এর জন্য হবিগঞ্জ পৌরসভার মাঠে ও চিলড্রেন পার্ক ব্যবহার করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। এরই মধ্যে জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি সর্বমহলে প্রচারিত হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে শায়েস্তানগরে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা বিএনপি। যথারীতি বিষয়টি লিখিতভাবে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু পুলিশ পার্টি অফিসের সামনে একটি ছোট মঞ্চ তৈরির কাজে বাধা দেয় এবং গলির পূর্ব, পশ্চিম মুখে বেরিকেড দিতে শুরু করে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি ও মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দুপুর ১২টার দিকে সভাস্থলে উপস্থিত হন। এরইমধ্যে সভাস্থলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হতে শুরু করে। কিন্তু পুলিশ হবিগঞ্জ শহরের সবগুলো প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে সভাস্থলে আসা নেতাকর্মীদের আটক ও হয়রানি করতে থাকে।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে- এক পর্যায়ে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সদর থানার ওসি মাসুক আলী, ডিবির ওসি আল আমিন এবং ওসি (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদের নির্দেশে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক পুলিশ সমাবেশস্থলের সামনে ছাত্রদলের মিছিলে গুলি শুরু করে। পুলিশের গুলিতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পুলিশের গুলিতে প্রায় ৩০০ নেতাকর্মী আহত হন। 

মামলার আসামীগণ বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে সর্বমোট ৭৫৪ টি শর্টগানের বা ৪৪৮ টি শর্টগানের সীশা এবং ৯০টি গ্যাস গানের শর্টসেল নিক্ষেপ করে এবং তিনশত নেতাকর্মীকে আহত করে। 

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন/এনএফ