কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে বরাদ্দ চারটি ফেরির একটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যঘাটে। আরেকটিতে যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দেওয়ায় ২টি ফেরি দিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ফেরিসংকটে এ রুটে যানবাহনকে পারাপারের জন্য ১৬-২০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে ৪ শতাধিক যানবাহন।

রোববার (২ জানুয়ারি ) দুপুরে পাবনার কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর সেতুর দুপাশে মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকে। সেইসঙ্গে ঘাটেও বেড়েছে যানবাহনের চাপ। চারটি ফেরির মধ্যে বড় দুটি ফেরি নেওয়া হয়েছে অন্যঘাটে। সেইসঙ্গে ছোট একটি ফেরি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে তিনটি ফেরি ঘাটে চলছিল।

একটি ফেরিতে গতকাল শনিবার সকালে যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দিয়েছে। সেটি মেরামতের জন্য আরিচাঘাটে পাঠানো হয়েছে। এত বড় রুটে মাত্র দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার সম্ভব নয়। বিষয়টি স্থানীয় এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি। দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান পাচ্ছি না বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, এই রুট এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে দীর্ঘ যানজটের কারণে পাবনাসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ এ নদীপথকে বেছে নিয়েছেন। ফলে নৌপথে হঠাৎ যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ বাড়লেও ফেরি বাড়ানো হচ্ছে না।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে কপোতি ফেরিতে যান্ত্রিক ক্রটি দেখা দিলে সেটি মেরামতের জন্য আরিচাঘাটে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ফেরি কদম ও ক্যামেলিয়া নামে দুটি ছোট ফেরি চলাচল করছে।

সরেজমিনে কাজিরহাট ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অনেকে গাড়ির মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবহন চালকরা।

যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসার পথে যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। ফলে ট্রাকসহ অনেক যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু এড়িয়ে কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ফেরিতে ঢাকায় যাওয়া-আসা করছে। এতে নৌপথে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

স্থানীয় শিপন মনিরুজ্জামান জানান, আমাদের এখানে ফেরি চালু হওয়াতে বড় স্বপ্ন দেখেছিলাম। অন্তত পাবনার মানুষজন অনায়াসে ঢাকা যেতে পারবে। এখন ঢাকা যাওয়া তো দূরের কথা, ফেরিঘাটই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। অনেকে একদিন এক রাত অপেক্ষা করেও ফেরি পার হতে পারছে না।

কাজিরহাট ঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নানা সমস্যায় জর্জরিত এই ঘাট। প্রথমত ফেরিসংকট।  তারপরও যেসব ফেরি এখানে দেওয়া হয়েছে সব পুরোনো ও ক্রটিযুক্ত। প্রায়ই ফেরিতে যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দেয়। গত পাঁচ দিন পরিবহনগুলো অনায়াসে পারাপার হয়েছে। হঠাৎ করে একটি ফেরিতে যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দেওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর