কুড়িগ্রামে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যার ৫ গুণ রোগী ভর্তি
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে শয্যা-সংকটে ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। এমনকি মেঝের বেডে সর্বোচ্চ ৩ জন রোগী গাদাগাদি করে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মোট ৫৬ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৪৩, যা মোট রোগীর প্রায় ৭৭ শতাংশ। এদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি গত এক সপ্তাহের (৫ থেকে ১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দৈনিক গড়ে ৪৭ জন রোগী চিকিসাধীন অবস্থায় ছিল, যা ওই ওয়ার্ডের শয্যাসংখ্যার ৪ গুণ বেশি।
বিজ্ঞাপন
দুপুরে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গেলে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা খাতুন জানান, কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রোগীর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। ১২ বেডের এই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়। এখনো রোগী আসছে। তাই সবাইকে বেডে জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝেতে একই বিছানায় যায়গা হয়েছে আদিত্য (৮ মাস), আরাফাত (১১ মাস), রিয়া মনি (১০ মাস) নামের তিন শিশুর। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে আজ সকালে ভর্তি হয় বলে জানিয়েছেন তাকের অভিভাবকরা। গাদাগাদি করে থাকায় তাদেরও কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়ন থেকে আসা রাফিয়া মনিকে (১৭ মাস) ভর্তি করা হয় গতকাল। মেঝেতে কোনোমতে বিছানা করে শিশুকে কোলে নিয়ে রাফিয়া মনির মা ছালেহা বেগম বলেন, হাসপাতালে এত ভিড় থাকলে আমি নিজেও অসুস্থ হব। তারপরও হাসপাতালে এসেছি আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ না করলেও কোনো অভিযোগ করেননি তিনি।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, রোগীর সংখ্যার তুলনায় শয্যা ও ডাক্তার পর্যাপ্ত না থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ৬০ জন নার্স দিয়ে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
মো. জুয়েল রানা/এনএ